মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুণ্ডচ্ছেদ করতে পারলে ১১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আলিগড়ের বিজেপি যুবনেতা যোগেশ ভার্সনেইয়ের এই ফতোয়া ঘিরে উত্তাল ভারতীয় রাজনীতি। উত্তাল সংসদ। প্রকাশ্যে মমতাকে খুনের হুমকি নিয়ে এদিন সংসদে সোচ্চার হন বিরোধীরা। সংসদের দুই কক্ষেই বিষয়টি তোলেন তৃণমূল সাংসদরা। কড়া ভাষায় এর সমালোচনা করে এ ধরণের বক্তব্যের জন্য যোগেশের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তোলেন তাঁরা। সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন এদিন জোর গলায় জানতে চান কারও এত বড় সাহস হল কি করে? কীভাবে একজন মহিলা সম্বন্ধে একথা বলা যায়, যেখানে ভারতে সুরক্ষা নিয়ে মহিলারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন? বিজেপি যুবনেতার এই খুনের হুমকির তীব্র নিন্দা করেছেন অন্যান্য দলের সাংসদরাও। কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া বার্তা দেওয়ার দাবি তোলেন। দলের এক যুবনেতার এমন বক্তব্যে কোণঠাসা বিজেপিও অবশেষে বাধ্য হয় যোগেশের বক্তব্যের নিন্দা করতে। যদিও রাজ্যসভায় পাল্টা সোচ্চার হতে দেখা গেছে বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে। তাঁর দাবি, তৃণমূলের মারে তাঁকে ৩ মাস বিছানায় পড়ে থাকতে হয়েছে। আগে তার উত্তর দিক তৃণমূল।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবে খোলাখুলি খুনের হুমকি নিয়ে মুখ খুলেছেন বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও। সংসদে মায়াবতী সাফ জানিয়েছেন, শুধু নিন্দা করলেই চলবে না, এর বিরুদ্ধে বিজেপিকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। এদিন সব শোনার পর রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পিজে কুরিয়েন জানিয়েছেন, যোগেশের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার প্রয়োজনে এফআইআর দায়ের করে পদক্ষেপ করতে পারে। প্রায় একই কথা বলেছেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভি। সামান্য কথায় যোগেশের বক্তব্যের নিন্দা করে নাকভি জানান, রাজ্য সরকার চাইলে এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। গত মঙ্গলবার হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে অনুমতি ছাড়াই সিউড়িতে বিশাল মিছিল বার হয়। একসময়ে পুলিশ মিছিল আটকালে ধুন্ধুমার বেধে যায়। বাধ্য হয়ে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। এই ঘটনাকে সামনে রেখেই এক প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি যুবমোর্চার নেতা যোগেশ ভার্সনেই দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী যা করছেন তাতে তাঁর এই পৃথিবীতে বাঁচার প্রয়োজন নেই। তাই যে তাঁর মুণ্ডচ্ছেদ করতে পারবে তাকে ১১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেবে সে। সেই বক্তব্য সামনে আসার পরই শুরু হয় তোলপাড়। যোগেশের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূল নেতারাও। এদিকে যাঁকে নিয়ে এতকিছু সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। পাগলে কিনা বলে বলে বিষয়টিকে এড়িয়ে গেছেন তিনি।