দেশি পিস্তলে শেষ জীবনের সব স্বপ্ন
বয়স মাত্র ১৭ বছর। জীবনে পড়াশোনা করে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল ছেলেটা। কিন্তু নির্মম বাস্তবের সঙ্গে লড়াইটা করতে পারল না সে।
শাহজাহানপুর : পড়াশোনা করে নিজের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে চেয়েছিল ছেলেটা। জীবনের অন্যতম বড় পরীক্ষা তার স্বপ্নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করত তাকে। কিন্তু পরীক্ষাটা সে আর দিতে পারল না। মাত্র ৮ হাজার টাকা কেড়ে নিল ১৭ বছরের একটা তাজা প্রাণ।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র অনুপ কুমার শুধুই চেয়েছিল পড়াশোনা করতে। কিন্তু তার স্বপ্ন আর বাস্তবের মধ্যে বাধা হয়ে এসে দাঁড়াল স্কুলের মাইনের ৮ হাজার টাকা। স্কুলের মাইনে মেটাতে না পারায় হতাশায় একটি দেশি পিস্তল দিয়ে নিজেকেই গুলি করে শেষ করে দিল সে।
উত্তরপ্রদেশের খুবই দরিদ্র পরিবারের ছেলে অনুপ। তার বাবা পরমেশ্বর দয়াল পেশায় শ্রমিক। অনেকদিন ধরেই স্কুলের মাইনের টাকা মেটাতে পারেননি তিনি। অভিযোগ স্কুলে এর জন্য প্রায়ই অপমানিত হতে হত অনুপকে।
অনুপের পরিবারের দাবি, একসময় স্কুল থেকে বলা হয় মাইনে না মেটালে তাকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না। এতে ভেঙে পড়ে দ্বাদশ শ্রেণির এই পড়ুয়া। অনেক কাকুতি মিনতি করার পরও স্কুল কর্তৃপক্ষ অনড় থাকে তাদের সিদ্ধান্তে।
ছেলের এই হতাশা সহ্য করতে পারেননি বাবা। ছেলেকে কথা দেন যে করেই হোক মাইনের টাকা তিনি মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও সেই টাকা জোগাড় করতে ব্যর্থ হন দরিদ্র পিতা।
পরীক্ষায় বসার শেষ আশাও নিভে যাওয়ার পর হতাশায় ডুবে যাওয়া অনুপ নিজের ঘরে গিয়ে নিজেকে শেষ করে দেয় বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
একটি দেশি পিস্তল থেকে গুলি করে নিজেকে শেষ করে ওই কিশোর। গুলির শব্দ শুনে ছুটে আসেন পরিবারের লোকজন। রক্তে ভেসে যাওয়া ঘরের মধ্যে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র অনুপের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কি করে অনুপের কাছে ওই দেশি পিস্তলটি এল তা নিয়েও তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিবারের তরফে এখনও অবধি কারুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা