হোটেলের খাবার খেতে জঙ্গল ছাড়ছে ভাল্লুকরা
হোটেলের খাবার চেটেপুটে সাবাড় করে দিচ্ছে তারা। ঘুর ঘুর করছে হোটেলের আশপাশে। গবেষণা থেকে এমনই জানা যাচ্ছে।
জয়পুর : ঘাস, শেকড়বাকড়, বেরি বা অন্য ফল, পোকামাকড়, মাছ তো তাদের খাবার বটেই, সেইসঙ্গে তাদের পছন্দের তালিকায় ছিল মধু। মৌচাক ভেঙে মধু খেতে ওস্তাদ ভাল্লুকরা। কিন্তু এবার সামনে এল আরও এক তথ্য।
হোটেলের রান্না করা খাবারের প্রতি তাদের টান এতটাই যে তাদের লোকালয়ে ঘোরাফেরা বেড়ে গেছে। হোটেলের খাবার এতটাই লোভনীয় তাদের কাছে যে জঙ্গল ছেড়ে ভাল্লুকরা ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। প্রায়ই তাদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় হোটেলগুলোর আশেপাশে।
একবার হোটেলের খাবার চেখে নিলে জঙ্গল থেকে জোগাড় করা খাবার মুখে রুচছে না ভাল্লুকদের। মোহনলাল সুখদিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক উদয়পুরে ভাল্লুকদের ওপর গবেষণা করে গবেষণাপত্রটি পাঠান কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
গবেষণাপত্রটি বিজ্ঞানীদের দ্বারা বিশ্লেষিত হওয়ার পর সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ওরিক্স নামে পত্রিকায়। সেখান থেকেই জানা গেছে ভাল্লুকদের এমন অদ্ভুত পছন্দের বিষয়টি।
গবেষক উৎকর্ষ প্রজাপতি, সহ-অধ্যাপক বিজয় কুমার কোলি ও নেচার কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের বৈজ্ঞানিক কে এস গোপি সুন্দর মিলিত ভাবে এই গবেষণাটি চালান।
উৎকর্ষ জানিয়েছেন, প্রথম কোনও গবেষণায় প্রমাণিত হল যে শ্লথ ভাল্লুকরাও লোকালয়ে প্রবেশ করে। ভাল্লুক সাধারণত লাজুক প্রকৃতির প্রাণি হিসাবে পরিচিত। কিন্তু তারা তাদের বহু বছরের অভ্যাস পাল্টে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে খাবারের সন্ধানে।
বন দফতরের উপ বন সংরক্ষক বালাজি কুরি জানিয়েছেন, গত ৫ বছরে ভাল্লুকদের লোকালয়ে প্রবেশের প্রবণতা বেড়েছে এবং গত ২ বছর ধরে তারা মানুষের ওপর হামলাও চালাচ্ছে।
এই গবেষণায় জানা গেছে আরও একটি চমকপ্রদ তথ্য। খুব অদ্ভুতভাবে ভাল্লুকরা মহিলাদের ওপর হামলা করছে। শিশুদের নিয়ে কোনও মহিলাকে রাস্তায় দেখলেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছে।
তবে ভাল্লুকদের লোকালয়ে ঢোকার প্রধান উদ্দেশ্যই থাকছে কোনও হোটেলের বাইরে ডাস্টবিনে পড়ে থাকা উচ্ছিষ্ট খাওয়া। হোটেলের খাবারের প্রতি তাদের এই আকর্ষণের কথা জেনে অবাক হচ্ছেন অনেকেই। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা