ঘুরপথে ভোটে লড়তে বিয়ে সারলেন এক ব্যক্তি
সংসার করার জন্য তিনি বিয়ে করেননি। করেছেন বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন করতে। তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে। এমনই এক তাজ্জব কাণ্ড করলেন এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি।
বালিয়া (উত্তরপ্রদেশ) : জীবনে অন্তত একবার পঞ্চায়েত প্রধান হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে ভোটেও দাঁড়ান। কিন্তু সেবার জিততে পারেননি। হার স্বীকার করে নিলেও হাল ছাড়েননি। একবার না পারিলে দেখ শতবার এর পরামর্শ মেনে আবার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন জোরকদমে।
প্রায় ১ দশক ধরে মানুষের সেবা করছেন তিনি। গ্রামে তাঁর যথেষ্টই সুনাম। আছেন অনেক অনুগামীও। এবার তো তিনি জিতবেনই ভেবে রেখেছিলেন। কিন্তু হঠাৎই গেল সব গণ্ডগোল হয়ে।
তিনি জানতে পারলেন এবারে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রধান যোগ্যতাটি ছাড়া তাঁর সবকিছুই আছে। ফলে তিনি কোনওভাবেই ওই আসনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলার করণ ছাপড়া গ্রামের বাসিন্দা হাতি সিং-এর যখন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সব আশাই জলে, তখন তাঁর এক অনুগামী তাঁকে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়ে বসেন।
এমন সঙ্কটের মুহুর্তে এসব কথা শুনে ৪৫ বছরের হাতি সিংয়ের রেগে যাওয়ার কথা ছিল। কারণ তিনি কখনও বিয়ে করবেননা বলেই ঘোষণা করে রেখেছেন। কিন্তু ওই অনুগামীর পরামর্শ হাতি সিং কার্যত লুফে নেন।
এমন ভাবার কোনও কারণ নেই যে হঠাৎ তাঁর বিয়ের ইচ্ছে জেগে উঠেছে। একেবারেই তা নয়। কিন্তু তিনি লক্ষ্যে অবিচল থাকতে বিয়ে করতেও রাজি হয়ে যান।
প্রসঙ্গত হাতি সিংয়ের গ্রামের ওই আসনটি এবার মহিলা সংরক্ষিত করা হয়েছে। তাই হাতি সিং স্থির করেন বিয়ে করে স্ত্রীকে তিনি ওই আসন থেকে দাঁড় করাবেন। বিয়ে করার পরামর্শটি তাঁর বুক থেকে একটা বোঝা নামিয়ে দেয়।
এদিকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আর বেশিদিন বাকি নেই। তারমধ্যেই বিয়েটা সেরে ফেলতে হবে যাতে স্ত্রীর নামটি প্রার্থী হিসেবে পেশ করা যায়। পাত্রীর সন্ধানও পাওয়া গেল দ্রুত।
এরপর গত ২৬ মার্চ ধর্মনাথজি মন্দিরে হাতি সিং বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সংসার করা তাঁর লক্ষ্য নয়। বরং স্ত্রীকে ভোটে দাঁড় করানোই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। তাই মলমাসেরও তোয়াক্কা করেননি হাতি সিং। হোক না মলমাস, তাতে ক্ষতি কি! ১৩ এপ্রিল যে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।
হাতি সিংয়ের নববিবাহিতা স্ত্রী এখন শ্বশুরবাড়ি এসে শুধু স্নাতক স্তরের পড়াশোনাই করছেন না, তৈরি হচ্ছেন নির্বাচনী যুদ্ধে লড়ার জন্য।
মানুষ জীবনে অনেক স্বপ্ন দেখে। তার মধ্যে কিছু পূর্ণ হয় আবার কিছু থেকে যায় অপূর্ণই। বাবা মায়েরা সন্তানের মধ্যে দিয়ে নিজের না পূরণ হওয়া স্বপ্নগুলি বাস্তব করার চেষ্টা করেন। এমনটা ঘটেই থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে। তবে স্ত্রীর মাধ্যমে নিজের অপূর্ণ সাধ পূরণ করার জন্য ব্যতিক্রমী হয়ে রইলেন করণ ছাপড়ার হাতি সিং। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা