পকোড়া দিতে দেরি কেড়ে নিল কিশোরের প্রাণ
সামান্য পকোড়া দিতে দেরি হওয়ায় এক কিশোরের প্রাণ গেল। ঘটনার জেরে এক ব্যক্তির বাড়িতে চড়াও হন গ্রামবাসীরা। এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
বীরাভরম (অন্ধ্রপ্রদেশ) : রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাবারের অর্ডার দিয়ে অনেক সময়ই কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হয়। সবাইকেই পছন্দের খাবারটির অপেক্ষায় অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। অর্ডারটি তৈরি হয়ে আসতে কিঞ্চিত দেরি হলেই অধৈর্য হয়ে পড়েন ক্রেতারা। এর জন্য হয়তো যিনি খাবার সার্ভ করতে আসেন তাঁকে খানিক ভর্ৎসনাও করেন। আর খুব বেশি অসন্তুষ্ট হলে ক্রেতা অভিযোগ করেন রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে ওই পর্যন্তই।
খাবারের অর্ডার দেওয়ার পর তা দিতে দেরি করায় কখনও প্রাণসংশয় হতে পারে, এমনটা কি কেউ কখনও ভেবেছেন। কিন্তু এমনই একটি ঘটনা ঘটল অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলায়। সামান্য কটা চিকেন পকোড়া পৌঁছতে দেরি হল বলে আদিবাসী কিশোরের প্রাণটাই কেড়ে নিলেন ক্ষুব্ধ ক্রেতা।
অন্ধ্রপ্রদেশের বীরাভরম জেলায় একটি ছোট তেলেভাজার দোকান চালান সিঙ্গম এসু বাবু। আর এসু বাবুকে কাজে সাহায্য করত তাঁর ১৫ বছরের সন্তান সিঙ্গম শিবা গণেশ। ওই গ্রামে এসু বাবুর পরিবারই একমাত্র এরুকুলা জনজাতিভুক্ত। তাঁদের দোকানে প্রায়ই খাবার কিনতে আসত বছর ৪২-এর নাগেশ্বর রাও।
ওইদিনও সে দোকানে এসেছিল চিকেন পকোড়া কেনার জন্য। অর্ডার দেয়। কিন্তু পকোড়া তার কাছে পৌঁছতে দেরি হচ্ছিল। তাতেই ধৈর্য হারায় নাগেশ্বর রাও। সেসময় গণেশও তার বাবার সাথে দোকানের কাজ করছিল। তাকে উদ্দেশ্য করে নাগেশ্বর রাও অকথ্য গালিগালাজ করতে শুরু করে বলে অভিযোগ।
নাগেশ্বর রাও চরম অশান্তি শুরু করলে গণেশ ও এসু বাবু প্রতিবাদ করেন। এতেই আগুনে ঘি পড়ে। অভিযোগ, রাও তার এসএউভি গাড়িটি নিয়ে গণেশকে তাদের দোকানের দেওয়ালের সাথে প্রায় পিষে দেওয়ার চেষ্টা করে।
গুরুতর আঘাত পায় গণেশ। এমনকি আঘাতের ফলে দেওয়ালটিও ভেঙ্গে পড়ে। তারপর রাও একটি লাঠি দিয়ে ক্রমাগত আঘাত করতে থাকে গণেশের বাবা এসু বাবুকে।
আশেপাশের মানুষজন থামাতে যান রাওকে। তখন রাও গাড়ি থেকে রড বের করে ভেঙ্গে দেয় দোকানের একাংশ। উপস্থিত সকলকে হুমকিও দেয় সে।
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু হয় গণেশের। তারপরই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা চড়াও হন রাও-এর বাড়িতে। কিরামপুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ গ্রেফতার করে নাগেশ্বর রাওকে। পুলিশের কাছে অপরাধ স্বীকার করেছে তিরুমালাশেট্টি ভেঙ্কট নাগেশ্বর রাও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা