National

চৈত্রসংক্রান্তিতে দেশবাসীর শিরেসংক্রান্তি

একদিনে বিপুল সংখ্যক সংক্রমিতের খোঁজ মিলল ভারতে। অর্থাৎ গত দিনের তুলনায় অনেকটা বাড়ল সংক্রমণ। যা কার্যত দেশবাসীর জন্য শিরেসংক্রান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চৈত্রসংক্রান্তি মানেই একটি বঙ্গাব্দের শেষ। চৈত্রসংক্রান্তি মানেই গাজনের মেলা, উৎসবের আবহ। কিন্তু সে উৎসব এখন লাটে উঠেছে। দেশে একদিনে সংক্রমিতের সংখ্যার ধাক্কায় চৈত্রসংক্রান্তি এখন দেশবাসীর জন্য শিরেসংক্রান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এপ্রিলের শুরুতেই দেশ করোনা সংক্রমণে রেকর্ড উচ্চতা ছুঁয়ে ১ লক্ষ পার করে। তারপর থেকে তা বেড়েই চলেছিল। টানা ১২ দিন ধরে বাড়ার পর গত দিন সামান্য কমে সংক্রমণ। কিন্তু এদিন তা ফের একটা লম্বা লাফ দিয়ে পৌঁছে গেল রেকর্ড উচ্চতায়।


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপটে দেশে চৈত্রসংক্রান্তির দিন ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৩৭২ জন সংক্রমিতের খোঁজ মিলল। মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, ছত্তিসগড়, গুজরাট, কেরালা, তামিলনাড়ু তো বটেই এখন কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ সহ অন্য রাজ্যেও বাড়ছে সংক্রমণ।

সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তে দেশে ক্রমশ অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ফেব্রুয়ারিতেও যেখানে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা কমতে কমতে ১ লক্ষের নিচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, সেখানে বাড়তে বাড়তে তা এদিন সাড়ে ১৩ লক্ষ পার করল।


এই প্রথম দেশে একদিনে ১ লক্ষের ওপর অ্যাকটিভ রোগী পাওয়া গেল। এদিন নমুনা পরীক্ষা গত দিনের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। ১৪ লক্ষ ১১ হাজার ৭৫৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির হাত ধরে দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা এদিন ১ কোটি ৩৮ লক্ষ ৭৩ হাজার ৪২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এখন একদিনে দেড় লক্ষ পার করছে সংক্রমিতের মোট সংখ্যা।

সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা এদিনও সংক্রমিতের চেয়ে অনেক কম হয়েছে। ফলে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এদিন দেশে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা সাড়ে ১৩ লক্ষের ওপর পৌঁছে গেছে। দাঁড়িয়েছে ১৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৭০৪ জনে।

একদিনে বেড়েছে ১ লক্ষ ১ হাজার ৬ জন। এদিকে করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা বাড়ায় অ্যাকটিভ রোগীর শতাংশের হারও ফের বেড়েছে। বেড়ে হয়েছে ৯.৮৪ শতাংশ।

এপ্রিল শুরুই হয়েছে সাড়ে ৪০০ পার করা দৈনিক করোনায় মৃত্যু দিয়ে। এদিন তা ১ হাজার পার করল। দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর এই প্রথম একদিনে ১ হাজার পার করল করোনায় মৃত্যু।

গত একদিনে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৭ জনের। এদিনের মৃতের সংখ্যার হাত ধরে দেশে মোট করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৫ জন। মৃত্যুর হার ১.২৫ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১.২৪ শতাংশ।

গত একদিনে দেশে রাজ্য ভিত্তিক যে মৃতের সংখ্যার খতিয়ান সামনে এসেছে তাতে একদিনে করোনায় মৃত্যুর নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ কিছুটা পিছিয়েই রয়েছে। রাজ্যে গত দিন ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত একদিনে মহারাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ২৮১ জনের। ছত্তিসগড়ে ১৫৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনায়। কর্ণাটকে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাটে মৃত্যু হয়েছে ৬৭ জনের। উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু হয়েছে ৮৫ জনের। দিল্লিতে মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। পঞ্জাবে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে শুরু করায় দৈনিক সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা দৈনিক সংক্রমিতের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮২ হাজার ৩৩৯ জন।

এর হাত ধরে দেশে করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২৩ লক্ষ ৩৬ হাজার ৩৬ জন। সুস্থতার হার নেমে দাঁড়িয়েছে ৮৮.৯২ শতাংশে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article
Back to top button