National

বাগানে একসঙ্গে ফলছে আম ও আপেল, অনন্য কীর্তি চাষির

আজব কাণ্ড বললেও বোধহয় কম বলা হয়। আম আর আপেল যে একই বাগানে একসঙ্গে ফলানো সম্ভব তা বোধহয় না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হত।

আপেল ঠান্ডা জায়গার ফল। যে কারণে ভারতের কাশ্মীর আর হিমাচল প্রদেশে আপেলের ফলন হয়। একটানা কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়া পেলে তবেই আপেল বাগানে আপেল গাছ জুড়ে আসে ফুল। তারপর গাছ ভরে যায় আপেলে।

এতদিন এটাই ছিল স্বাভাবিক ধারণা। এখনও এই কারণেই ভারতের ২ রাজ্য কাশ্মীর ও হিমাচলে আপেল বাগান ভরে রয়েছে। এখান থেকেই সারাবছর দেশের কোণায় কোণায় পৌঁছে যায় আপেল।


এবার কিন্তু সেই চিরাচরিত আপেল ফলনে বোধহয় এবার দাঁড়ি পড়তে চলেছে। এবার হয়তো দেশের সর্বত্রই আপেল ফলবে।

এখন কিন্তু আপেল চাষ হচ্ছে কর্ণাটক, ছত্তিসগড়, মণিপুর, তেলেঙ্গানাতেও। এছাড়াও কিছু রাজ্যে আপেল চাষ শুরু হয়েছে যেখানকার মানুষ একটানা কনকনে ঠান্ডা কাকে বলে তা জানেনই না।


৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি চড়া পারদে পিচগলা গরমের জায়গাতেও এখন আপেল ফলানো সম্ভব। আর সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন হিমাচলের হরিমন শর্মা।

পড়াশোনা দশম শ্রেণি পর্যন্ত। কোনও তথাকথিত কৃষি বিজ্ঞান হরিমন শর্মার জানা নেই। কিন্তু বাগান করা নিয়ে তাঁর উৎসাহ ছিল ছোট থেকেই।

হিমাচলের পাহাড়ি এলাকা নয়, হরিমনের বাস সমতলে। সেখানে সেই ঠান্ডা নেই। কম বয়সে একবার আপেল খেয়ে নিজেদের বাড়ির পিছনের খোলা জমিতে তার বীজগুলি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন হরিমন শর্মা।

সেটা ছিল ১৯৯৮ সাল। তারপর তা থেকে তিনি লক্ষ্য করেন গরমেও বেড়ে উঠল আপেল গাছ। তাতে ফুল এল। ফল এল। এই গরমেও আপেল ফলছে!

হরিমন গাছটিতে হওয়া মঞ্জরি থেকে এবার শুরু করলেন তাঁর গ্রামেই আপেল গাছ বানানো। ক্রমে একটি আপেল বাগানই বানিয়ে ফেললেন তিনি।

হরিমন এখন একই জমিতে আপেলের সঙ্গে আম ফলিয়ে চমকে দেন সকলকে। আপেল আর আম এক ধরনের পরিবেশের ফল নয়। কিন্তু তা একই মাটিতে, একই বাগানে একসঙ্গে ফলছে।

২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে হরিমন শর্মার এই উদ্ভাবনকে মান্যতা দিয়ে ন্যাশনাল ইনোভেশন ফাউন্ডেশন দেশের ২৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই আপেল ফলানো পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করে। এই গাছ রাষ্ট্রপতি ভবনেও লাগানো হয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article
Back to top button