শ্মশানে দাহ করার ১৮ দিন পর বাড়ি ফিরে এলেন বৃদ্ধা
প্রায় ভূত দেখার মতই চমকে উঠলেন সকলে। যাঁকে ১৮ দিন আগে তাঁর স্বামী চোখের জলে দাহ করেছিলেন শ্মশানে সেই স্ত্রী নিজের পায়ে হেঁটে ফিরে এলেন বাড়িতে।
হয়ে গিয়েছিল শ্রাদ্ধের কাজ। গত ১ জুন তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে একটি শোকসভার আয়োজন করা হয়েছিল বাড়িতে। সেই শোকসভার পর তখন তাঁকে হারানোর কষ্ট মুছে উঠতে পারেননি তাঁর স্বামী থেকে পরিজন।
চোখের জল তখনও শুকোনোর সময় পায়নি। তখনই সকলকে কার্যত চমকে দিয়ে বাড়ি ফিরে এলেন সেই মৃত স্ত্রী।
প্রথম ভূত দেখার মতই চমকে ওঠেন সকলে। যাঁকে ১৮ দিন আগে তাঁর স্বামী নিজে হাতে দাহ করেছিলেন সেই স্ত্রী বহাল তবিয়তে ফিরে এলেন!
গত ১৫ মে হাসপাতাল থেকে খবর দেওয়া হয় পরিবারকে যে তাঁদের পরিবারের করোনা সংক্রমণের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৭৫ বছরের বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
তাঁর স্বামী হাসপাতালে থেকে দেহ হাতে পান। প্লাস্টিকে মোড়া দেহ তাঁর চোখের সামনে সৎকার হয়। অন্ত্যেষ্টির সময় চোখের জলে তিনি নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর পরিজনকে হারানোর শোকে গোটা পরিবার ভেঙে পড়ে। এভাবে দিন কাটে। সময় আসে শ্রাদ্ধের। এরপর হয় স্মরণসভা। সেই স্মরণসভাও হয়ে যাওয়ার পর পরিবারের লোকজনকে স্তব্ধ করে বাড়ি ফেরেন ওই বৃদ্ধা।
ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা জেলার ক্রিশ্চিয়ানপেট গ্রামে। গত ১২ মে ৭৫ বছরের গিরিজাম্মা-কে ভর্তি করা হয় বিজয়ওয়াড়া হাসপাতালে।
প্রতিদিনই তাঁর স্বামী যেতেন তাঁকে দেখতে। গত ১৫ মে তিনি স্ত্রীকে ওয়ার্ডে দেখতে পাননি। এমনকি অন্য ওয়ার্ডেও তিনি ছিলেননা। নার্সরা তাঁকে জানান যখন কোথাও নেই তখন নিশ্চয়ই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
অবশেষে হাসপাতালের মর্গ থেকে তাঁকে একটি প্যাকেটবন্দি দেহ দেওয়া হয়। ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন হাসপাতাল জানায় তাঁর স্ত্রীর দেহ সেটি।
গ্রামে এনে স্ত্রীর প্যাকেটবন্দি অবস্থাতেই শ্মশানে সৎকার করেন তিনি। ২৩ মে পরিবার খবর পায় কর্মসূত্রে দূরে থাকা তাদের এক ছেলেও করোনায় মারা গেছেন।
শোকস্তব্ধ পরিবার মা ও ছেলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান একসঙ্গেই আয়োজন করে ১ জুন। আর তার পরদিনই গিরিজাম্মা বাড়ি ফিরে আসেন একা।
গিরিজাম্মা পরিবারের প্রতি ক্ষুব্ধও। এতদিন পরিবারের কেউ তাঁকে দেখতে যায়নি। কোনও খবর নেয়নি। হাসপাতাল তাঁকে ছাড়ার সময় ৩ হাজার টাকা দেয় বাড়ি ফেরার জন্য। যদিও পরে তাঁকে সব কথা খুলে বলা হয়।
এদিকে হাসপাতালের গাফিলতির অভিযোগ থাকলেও পুলিশ কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা