সরকারি খাতায় ১৯ বছর মৃত ফের বিয়ে করছেন স্ত্রীকে
আসলে বয়স ৬৬। কিন্তু সরকারি খাতায় ১৯ বছর মৃত থাকার পর তাঁর পুনর্জন্ম হয়েছে ২৮ বছর হল। এবার তিনি ফের বিয়ে করতে চলেছেন তাঁর স্ত্রীকে।
স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রী বিধবাই হন। সরকারি খাতায় হলেও তো সেটাই হবে। সরকার যখন বলছে যে তাঁর স্বামী মৃত, তখন তিনি তো বিধবাই হলেন। কিন্তু আদপে বহাল তবিয়তে বেঁচে ছিলেন লাল বিহারী। যাঁকে সরকারি খাতায় মৃত বলে দেখানো হয় ১৯৭৫ সালে।
একবার সরকারি খাতায় কারও নামের পাশে মৃত বসে গেলে তা মুছে ফেলা অত সহজ যে নয় তা লাল বিহারী হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন।
১৯৭৫ সালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি খাতায় ওঠে। তারপর থেকে সরকারি খাতায় মৃত লাল বিহারী কঠিন লড়াই চালিয়ে গেছেন এটা প্রমাণ করার জন্য যে তিনি জীবিত।
অবশেষে ১৯৯৪ সালের ৩০ জুন আইনি লড়াই জিতে তাঁর সরকারি খাতায় পুনর্জন্ম হয়। ফের জীবিত হয়ে যান উত্তরপ্রদেশের আজমগড় জেলার আমিলো গ্রামের বাসিন্দা লাল বিহারী।
আর সেই তথ্য অনুযায়ী তিনি সবে ২৭ বছর পূর্ণ করেছেন। ২০২২ সালে সরকারিভাবে ২৮ বছরের হওয়ার পর লাল বিহারী ফের বিয়ে করতে চলেছেন তাঁর ৫৬ বছর বয়স্ক ৩ সন্তানের জননী স্ত্রী কারমিদেবীকে।
৬৬ বছরের লাল বিহারী এখন সরকারিভাবে ২৭ বছরের যুবক। এই তো বিয়ের বয়স। এই বয়সে তো তিনি বিয়ে করতেই পারেন।
এ আসলে লাল বিহারীর এক বিপ্লব। তিনি ইতিমধ্যেই একটি মৃতক সংগঠনও তৈরি করে ফেলেছেন। তাঁর মত যাঁদের সরকারি খাতায় মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে তাঁদের ন্যায় দেওয়ানোর লড়াই চালাচ্ছে এই সংগঠন।
সরকারি খাতায় জীবন্ত মানুষকে মৃত দেখানো কোনও হঠাৎ হওয়া ভুল নয় বলেই জানাচ্ছেন লাল বিহারী। আদপে এর পিছনে রয়েছে সম্পত্তি হাতানোর এক গভীর ষড়যন্ত্র। যার সঙ্গে যুক্ত থাকেন ওই পরিবারের লোকজন ও কয়েকজন সরকারি আধিকারিক।
এঁদের যৌথ প্রচেষ্টায় এভাবে মৃত বলে ঘোষণা করে দেওয়া হয় কাউকে। তারপর তাঁকে মৃত দেখিয়ে তাঁর সম্পত্তি হাতিয়ে নেন পরিবারের অন্যরা।
বলে রাখা ভাল লাল বিহারীর জীবন ও তাঁর নিজেকে জীবিত প্রমাণ করার লড়াই নিয়ে একটি সিনেমাও তৈরি হয়েছে। নাম ‘কাগজ’। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা