একটি বছর ১৩-র নাবালিকা কান্না ভেজা গলায় বাবার কাছে বাঁচার আর্তি জানাচ্ছে। বাবাকে অনুরোধ করছে, বাড়ি বেচে তার বাবা যেন তার চিকিৎসা করায়। সে বাঁচতে চায়। স্কুলে যেতে চায়। বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে চায়। পরীক্ষা দিতে চায়। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলেছেন চিকিৎসা না করালে সে আর বাঁচবে না। তাই তার বাবা যেন বাড়ি বেচে তার চিকিৎসা করান। তাকে সুস্থ করে তোলেন। ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে তেলেগু ভাষায় সাই শ্রী-র সেই বাঁচার আর্তি আপাতত হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল। ছবিতে তার হাতে ক্ষতের দাগ স্পষ্ট। চোখের তলায় কালির ছোপ। ছোট মুখটা শুকিয়ে এতটুকু হয়ে গেছে। কিন্তু তারপরও বাবার মন গলাতে পারেনি সে। গত রবিবার অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ার বাসিন্দা ছোট্ট মেয়েটা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। শেষ হয়ে গেছে তার স্কুলে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে খেলার স্বপ্নগুলো। এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা ভারতকে। গত ৮ বছর ধরে সাইয়ের বাবা-মা আলাদা থাকেন। মায়ের কাছেই বড় হয়ে উঠেছে মেয়ে। আচমকাই একদিন সাই শ্রীর দেহে ধরা পড়ে মারণ ক্যানসারের অস্তিত্ব। চিকিৎসকেরা জানান বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়া ছোট্ট মেয়েটাকে বাঁচানো যাবে না। বাবার কাছে টাকা চেয়ে ফল হয়নি। তাই নিজের সর্বস্ব দিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা যোগার করে চিকিৎসা করান সাইয়ের মা সুমাশ্রী। তার পরও টাকার দরকার ছিল। হাতে শেষ সম্বল ছিল বাড়িটা। কিন্তু সাইয়ের বাবা শেট্টি শিবকুমারের তাতে আপত্তি ছিল। আইনগত কারণে তাই বাড়ি বিক্রি করা যাচ্ছিল না। টাকার সব পথ আটকে যাওয়ার পর অবশেষে মেয়ে সাই কাকুতি মিনতি করে বাবাকে বাড়ি বিক্রি করে তার চিকিৎসা করানোর কার্যত ভিক্ষা করে। অভিযোগ তাতেও কর্ণপাত না করে শিবকুমার জানিয় দিয়েছিলেন তার পক্ষে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি মেয়ের চিকিৎসার খরচ বহনের ক্ষমতা শিবকুমারের আছে। সাইয়ের আর্তি আর তারপর তার মৃত্যুতে এখন বহু মানুষের চোখেই জল। শিবকুমারকে কার্যত পিশাচের দলে ফেলেছেন তাঁরা। এমন এক ফুটফুটে মেয়ের এমন মৃত্যু অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। এদিকে পুলিশ তদন্ত করে দেখছে শিবকুমার মেয়ের চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন কিনা।