করোনায় শাপে বর, বেঁচে গেল উটরা
করোনার জেরে যখন গোটা দেশ ত্রাহি ত্রাহি রব তুলেছে তখন উলট পুরাণ হল উটদের জীবনে। কার্যত করোনাই তাদের ফের নতুন করে বাঁচার পথ দেখাল।
করোনায় কিছু ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠেছে। সেখানে মুনাফা ব্যবসায়ীদের মুখ থেকে হাসি থামাতে পারছেনা। তবে তা মুষ্টিমেয় ক্ষেত্রেই হয়েছে।
দেশের সিংহভাগ চরম বিপাকে পড়েছেন। চাকরি গেছে, কাজ গেছে, এমনকি সংসার চালাতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ।
এই পরিস্থিতি কিন্তু বাঁচিয়ে দিয়েছে উটদের। রাজস্থানে একসময় উট ছিল এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়ার একমাত্র উপায়। কিন্তু সেই উটের প্রয়োজন ক্রমশ কমতে থাকে যত গাড়ি বাড়তে থাকে।
এখন মানুষ গাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছেন গন্তব্যে। উটের আর প্রয়োজন কী! করোনায় সেই গাড়িই মিলছে না। পাওয়া যাচ্ছেনা গণ পরিবহণ।
দূরত্ববিধি মানতে তাই ফের মানুষ ঢলেছেন উটের দিকে। উটের পিঠে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার সুবিধা হল তাতে দূরত্ববিধিও মানা হয়, আবার পৌঁছেও যাওয়া যায় প্রত্যন্ত এলাকায়।
রাজস্থানে অনেক বিয়ে বাড়ির তরফেও এখন উট ভাড়া করা হচ্ছে। তাতেই বর-কনে থেকে নিমন্ত্রিতরা হাজির হচ্ছেন। আবার উটের পিঠেই বাড়ি ফিরছেন।
কোথাও কারও সঙ্গে দেখা করতে গেলেও উটের পিঠে চড়ে বসছেন মানুষজন। এমনকি করোনায় থমকে যাওয়া পড়াশোনায় গতি আনতে প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষক ও পড়ার বই, খাতা, পেন, পেন্সিল নিয়ে হাজির হচ্ছে উট।
করোনার আগে উটে চড়ে যাতায়াতে অনীহা উটের প্রয়োজন কমাচ্ছিল। ভাড়া না হওয়ায় উটদের খাবারের যোগানও তার মালিকরা দিতে পারছিলেন না। অনেকেই তাঁদের উট বেচে দিচ্ছিলেন। মরুজাহাজের দেখা মেলা ভার হয়ে যাচ্ছিল গাড়ির দাপটে।
করোনা সেই পুরনো ছবি আবার ফিরিয়ে দিয়েছে। উটের পিঠেই এখন সওয়ার রাজস্থানের অধিকাংশ মানুষ। ফলে ব্যবসা বেড়েছে। আর তা উটদের জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা এখন ঠিকঠাক খাবার পাচ্ছে। যত্নে থাকছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা