National

২০ বছর পর বিয়ে হল বাবা-মায়ের, বরযাত্রী নিয়ে এল ছেলে

তাঁদের যে বিয়ে হবে এমনটা কেউ ভাবেননি। কিন্তু সেটা হল। আর হল ২০ বছরের অঙ্গাঙ্গী সম্পর্কের পর। যার সাক্ষী হল তাঁদের ছেলে।

বাবা-মায়ের বিয়ে দেখার সুযোগ তো কারও হয়না। এক কিশোরের হল। এটা তার কাছে বড় প্রাপ্তি। বাবা-মায়ের বিয়েতে সে শুধু সাক্ষীই রইল না, রীতিমত খাটাখাটনিও করল।

১৩ বছরের ছেলে অজয় বিয়ের দিন ছিল পাত্র পক্ষের দিকে। অর্থাৎ বাবার দিকে। বাবাকে বরের সাজে সাজিয়ে বরযাত্রী নিয়ে সে হাজির হল তার মা অর্থাৎ কনের বাড়ি।


বরযাত্রীদের সেখানে খাতির যত্নের অভাব হল না। ধুমধাম করে বিয়ে হলেও একটা কানাকড়িও ওই নবদম্পতির খরচ হল না। সব খরচ করলেন গ্রামবাসীরা।

৬০ বছরের পাত্র ও ৫৫ বছরের কনের জন্য গ্রামবাসীরাই বরপক্ষ ও কনেপক্ষে বিভক্ত হয়ে গেলেন। আর সাক্ষী হলেন এমন এক অভিনব বিয়ের। চুটিয়ে আনন্দও করলেন।


ঘটনার শুরু ২০০১ সালে। পেশায় কৃষক গ্রামের নারাইন রাইদাস প্রেম পড়েন রামরতির। রামরতিও গ্রামেরই মহিলা। নারাইনের তখন বয়স ৪০ বছর আর রামরতির ৩৫।

দুজনের প্রেমের কথা জানতে বাকি রইল না কারও। একসঙ্গে একই বাড়িতে দুজনে থাকতেও শুরু করলেন। এদিকে গ্রামে তো ঢিঢি পড়ে গেল।

দুজনের এভাবে বিয়ে না করে একসঙ্গে থাকা নিয়ে পাঁচজন পাঁচ কথা বলতেও শুরু করলেন। রাস্তাঘাটে ২ জনই টিটকিরির মুখে পড়তে থাকেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু যায় আসেনি রাইদাস ও রামরতির।

এরমধ্যে রামরতির কোল আলো করে আসে এক পুত্র সন্তান। ২ জন তাঁদের সন্তানকে যথেষ্ট আদর যত্নে বড় করতে থাকেন। কিন্তু তাঁরা স্থির করেছিলেন বিয়ে করবেননা। আর সেখানেই স্থির থাকেন। প্রবল টিটকিরি, অপমান সহ্য করেও নারাইন ও রামরতি নিজেদের অবস্থানে ছিলেন অনড়।

ছেলে অজয় এখন ১৩ বছরের কিশোর। এরমধ্যে একদিন নারাইন ও রামরতিকে ডেকে গ্রামের মোড়ল অনেক করে বোঝান যে নিজেদের কথা না হয় তাঁরা নাই ভাবলেন, কিন্তু অজয়ের কথা ভেবে এই চরম অপমান, টিটকিরি থেকে মুক্তি পেতে তাঁদের অন্তত বিয়ে করা উচিত। ছেলে বড় হচ্ছে। তার মনে প্রভাব পড়বে বলেও বোঝান মোড়ল।

অবশেষে ২ জন রাজি হন বিয়ে করতে। গ্রামের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় তাঁরা শুধু বিয়েটা করুন, বিয়ের সব খরচ গ্রামবাসীদের। অবশেষে ২০ বছরের সহবাস পরিবর্তিত হল দাম্পত্যে। যার সাক্ষী রইল ছেলে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article
Back to top button