নিজেদের বাড়ি নিজেরাই ভেঙে তছনছ করছেন গ্রামবাসীরা
যে বাড়িতে এতদিন ধরে রয়েছেন তাঁরা, সেই বাড়ি নিজেরাই ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছেন তাঁরা। এমনই এক মর্মান্তিক দৃশ্য নজর কাড়ল একটি গ্রামে।
অনেক দিনের স্বপ্ন নিয়ে, তিল তিল করে টাকা জমিয়ে একটু একটু করে দাঁড় করিয়েছিলেন তাঁরা স্বপ্নের আশিয়ানা। পরিবার নিয়ে সেই ছোট বাড়িই ছিল তাঁদের রাজপ্রাসাদ।
নিজেদের সেই স্বপ্নের মাথা গোঁজার জায়গাগুলো নিজেরাই হাতে করে ভেঙে দিচ্ছেন গ্রামের মানুষগুলো। এমন মর্মান্তিক দৃশ্যের সাক্ষী হলেন অনেকে।
নিজেদের সেই অনেক কষ্টে তৈরি করা বাড়ি ভেঙে ফেলতে অনেকের চোখই ভরেছিল জলে। রোল উঠেছিল কান্নার। কিন্তু কেন এমন কাণ্ড?
বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলার অনেক গ্রামে এখন বন্যার জল ঢুকছে। বুড়ি গণ্ডক নদী রুদ্র রূপ ধারণ করেছে। নদীর জল কুল ছাপিয়ে হুহু করে আশপাশের গ্রামে ঢুকছে। ভাসিয়ে দিচ্ছে সব কিছু। জলের তোড়ে খড়কুটোর মত ভেসে যাচ্ছে অনেক বাড়িঘর।
মাত্র ২ বছর আগে অনেক কষ্টে শ্রমিকের কাজ করে জমানো টাকায় তৈরি একতলা বাড়িটা কদিন আগেই গিলে নিয়েছে বুড়ি গণ্ডকের স্রোত। বাল্মীকি নগর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় পরিস্থিতি আরও শোচনীয় আকার নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বন্যাবিধ্বস্ত পূর্ব চম্পারণের সুগাউলি ব্লকের গ্রামের মানুষজন আগেভাগেই নিজেদের বাড়ি ভেঙে ফেলছেন। যাতে বন্যার জল তাঁদের বাড়ি এভাবে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে না পারে।
তাঁরা বাড়ি ভেঙে তার ইট, কাঠ, জানালা, দরজা, লোহার বিম, এমনকি বাড়ির জলের কল সবই আলাদা করে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে রাখছেন। যাতে বন্যা শেষ হলে যখন জল সরে যাবে তখন তাঁরা তাঁদেরই ইট, কাঠ, লোহা দিয়ে বাড়িটা আবার তৈরি করে ফেলতে পারেন।
বন্যা এসে ভাসিয়ে নিয়ে গেলে এসব কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। সবই ভেসে যাবে জলের তোড়ে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা