করোনা থেকে বাঁচতে ১৫ মাস স্নান না করে ঘরে বন্দি মা ও ২ মেয়ে
করোনা ভীতি কমবেশি প্রায় সকলকেই গ্রাস করেছে। স্নান না করে এক মহিলা তাঁর ২ মেয়েকে নিয়ে ১৫ মাস নিজেকে ঘরবন্দি করে রাখলেন এই ভয়ে।
করোনা দেশে থাবা বসানোর পর প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে লকডাউনের ডাক দেন। সেই দিন থেকে নিজেদের একটি ঘরে বন্দি করে ফেলেন মা ও তাঁর ২ মেয়ে। বাড়ির একটি ঘরে তাঁরা দরজা বন্ধ করে থাকতে শুরু করেন। পরিবারের ২ পুরুষ অবশ্য ঘরের বাইরে ছিলেন। একজন ওই মহিলার স্বামী, অন্যজন ছেলে।
৩ মহিলাই ঘরে নিজেদের বন্দি করে রাখায় ২ পুরুষকেই ঘরের সব কাজের দায়িত্ব তুলে নিতে হয়। ২ জন সকালে কাজে যাওয়ার আগে বাড়ি পরিস্কার করে, রান্নাবান্না করে রাখতেন। তারপর কাজ থেকে বাড়ি ফিরেও রান্না করতেন নিজেদের ও বাড়ির ৩ মহিলার জন্য।
ঘটনাটি অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার কাদালি গ্রামের। রুত্থামা নামে এক প্রৌঢ়া তাঁর ২ মেয়ে ৩২ বছরের রানি ও ৩০ বছরের কান্থামণিকে নিয়ে লকডাউনের দিন থেকে সেই যে ঘরে প্রবেশ করেন, কেবল বাথরুমে যাওয়ার জন্য তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়েছেন। এছাড়া নিজেদের ঘরেই রেখেছিলেন।
করোনা আতঙ্ক তাঁদের এতটাই পেয়ে বসেছিল যে সংক্রমণ থেকে বাঁচতে স্নান পর্যন্ত তাঁরা করতেন না। গত ১৫ মাস ধরে এমনই চলছিল।
এদিকে ৩ মহিলার শরীর এভাবে মাসের পর মাস ঘরে থাকতে থাকতে ভেঙে পড়ছিল। অবশেষে রুত্থামার ছেলে মহিলা পুলিশের দ্বারস্থ হন। সব জানান সেখানে।
মহিলা পুলিশের তরফে উদ্যোগ নিয়ে ওই ৩ মহিলাকে অনেক বুঝিয়ে ঘর থেকে বার করা হয়। তাঁদের শারীরিক অবস্থার কারণে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন সকলে।
কেন এতটা ভয় পেয়েছিলেন তাঁরা? পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন, দরিদ্র পরিবার। তাই তাঁরা ভেবেছিলেন একবার যদি করোনা সংক্রমণ হয় তাহলে হাসপাতালের খরচ তাঁদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। তাই নিজেদের ঘরবন্দি করে করোনা থেকে বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন ৩ জন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা