বাসেই চলছে ক্লাস, ক্লাসরুম বাসে, থেমে নেই পড়াশোনা
বাসের সিটে বসে গন্তব্যে পৌঁছনো যায়। আবার সেই বাসের সিটই হয়ে উঠতে পারে আস্ত ক্লাসরুম। যেখানে কখনই থেমে থাকেনা পড়াশোনা।
শিক্ষার অধিকার সকলের। বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলে। এখনও এ দেশে বহু শিশু রয়েছে যারা ক্লাস কাকে বলে তাই জানেনা। করোনায় তো অনেক শিশু স্কুলও ভুলেছে। অনলাইন ক্লাস তাদের কাছে স্বপ্নের মতন।
এই বয়সে পড়ার বদলে তাদের সকাল হলে বেড়িয়ে পড়তে হয় রোজগারের চেষ্টায়। এরা কেউ কাগজ কুড়িয়ে তো কেউ অন্য ছোটখাটো কাজ করে কিছু অর্থ নিয়ে ঘরে ফেরে। পড়াশোনা তাদের কাছে এবং তাদের পরিবারের কাছে বিলাসিতা।
এমনই শিশুদের শিক্ষাদান করতে রাস্তায় নেমেছে বাস। ৪টি বাস এখন আর যাত্রী নিয়ে ছোটে না। ছোটে তার পেটে একটা আস্ত ক্লাসরুম নিয়ে। যেখানে রয়েছে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, ব্ল্যাকবোর্ড, চক, ডাস্টার। উপরি পাওনা ক্লাসের মাঝে খাওয়া দাওয়া।
রাজধানী দিল্লির বুকে এমনই ৪টি বাস ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি এনজিও-র উদ্যোগে এই বাসগুলি পথে নেমেছে। তাদের মূল লক্ষ্য বস্তি এলাকায় পৌঁছে সেখানকার শিশুদের শিক্ষিত করে তোলা।
এমনই বিভিন্ন জায়গা বেছে নিয়ে সেখানে প্রথমে একটি দল গিয়ে পরিসংখ্যান নিচ্ছে। কত শিশু স্কুল যায়না, কত ছাত্রছাত্রী স্কুল ছেড়ে দিয়েছে। তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়ে গেলে বাস পৌঁছে যায় সেখানে।
বাসের সিটই শিশুদের ক্লাসরুমের বেঞ্চ হয়ে ওঠে। বিনামূল্যে শিক্ষাদানের পাশাপাশি তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্লেট, চক, পড়ার বই।
শিক্ষক তাদের তৈরি করেন সরকারি স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য। তাদের তৈরি করে সরকারি স্কুলে ভর্তি করার দায়িত্বও তুলে নিয়েছে এই সংস্থা।
ছাত্রছাত্রীও বাড়ছে। পড়ার ফাঁকে ছাত্রছাত্রীরা পাচ্ছে খাবার। প্রতিদিন ২ ঘণ্টা করে ২ জায়গায় ক্লাস করাচ্ছে একটি বাস। শিক্ষকদের ৫০ জনের একটি দল রয়েছে পড়ানোর জন্য। ফলে বস্তিতে বড় হওয়া শিশুগুলি স্বপ্ন দেখতে শিখছে।
তারা এখন কেউ পড়াশোনা করে ডাক্তার হতে চায়, কেউ পুলিশ আধিকারিক, কেউ বা অন্য কিছু। এই বাস ক্লাসরুমকে সংস্থা ‘হোপ বাসেস’ নাম দিয়েছে। সত্যিই তো স্বপ্ন দেখাচ্ছে এই অভিনব উদ্যোগ। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা