পড়াশোনার অদম্য ইচ্ছায় পাহাড়ে চড়ে পা হড়কাল মেধাবী ছাত্র
পড়াশোনার প্রতি তার টান ছোট থেকেই। কোনও ক্লাস বাদ দেয়না কোনওদিন। সেই পড়াশোনার টানেই পাহাড়ে উঠে মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হল সে।
চোখের জল বাঁধ মানছে না গোটা গ্রামের। ১৩ বছরের ছেলেটাকে হারিয়ে শুধু তার পরিবার নয়, গোটা গ্রামটাই শোকবিহ্বল। মেধাবী ছাত্র হিসাবে তার সুখ্যাতি রয়েছে।
একটা দিনের জন্য ক্লাস করা থেকে বিরত থাকত না সে। সেই ১৩ বছরের অন্দ্রিয় এই করোনার সময়ও স্কুলের প্রতিটি অনলাইন ক্লাস মন দিয়ে করেছে। পড়ার প্রতি তার সেই অদম্য আগ্রহের টানেই সে গত মঙ্গলবার খুঁজে বেড়াচ্ছিল মোবাইলের সিগনাল।
প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল সকাল থেকেই। এদিকে ক্লাসের সময় এগিয়ে এসেছে। অনলাইন ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু মোবাইলে সিগনালই আসছে না।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে গ্রামের এদিক ওদিক ঘুরেও সিগনাল না পেয়ে অন্দ্রিয় এগিয়ে যায় গ্রামের কাছে পাহাড়ের দিকে। পাহাড়ের কাছেও সিগনাল না পেয়ে সে স্থির করে পাহাড়ে উঠে যাবে। উঁচু জায়গায় সিগনাল দ্রুত পাওয়া যায় বলে সে শুনেছে।
প্রবল বৃষ্টি মাথায় করেই অন্দ্রিয় পাহাড়ে চড়তে থাকে। বৃষ্টিতে পাহাড় বড়ই ভয়ংকর। কিন্তু ছেলেটার ক্লাস করার উৎসাহ তাকে দমাতে পারেনি।
পাহাড়ের চূড়ার কাছে পৌঁছেও যায় সে। সেখানেই এদিক ওদিক করে সিগনাল ধরার চেষ্টা করতে থাকে। আর ঠিক সেই সময়ই বৃষ্টি ভেজা পিচ্ছিল পাথরে তার পা হড়কে যায়। পাহাড়ের একদম ওপর থেকে সটান নিচে আছড়ে পড়ে অন্দ্রিয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
পড়ার টানে পাহাড়ে চড়ে এমন এক মেধাবী ছাত্রের মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কেউ। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার রায়গড় জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা পান্দ্রাগুড়া গ্রামে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা