অসুস্থ স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে হাসপাতালের দিকে স্বামীর পথ হাঁটা শেষ হল না
অসুস্থ স্ত্রীকে কাঁধে ফেলেই হাঁটা শুরু করেছিলেন তিনি। ২ জনেরই বয়স হয়েছে। তবু স্ত্রীকে বাঁচাতে বৃষ্টিতে শোচনীয় চেহারা নেওয়া পাহাড়ি পথ ধরেই এগোলেন স্বামী।
করোনার জেরে স্থানীয় যে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে সেটাও এক বছর হল বন্ধ। ফলে যদি গ্রামের কারও চিকিৎসার দরকার পড়ে তাহলে তাঁকে আগে ২২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হবে। তারপর হাসপাতালে পৌঁছনো। তারপর চিকিৎসা।
গত বুধবার ৬০ বছরের সিধালিবাই নামে এক প্রৌঢ়া স্বামীকে জানান তাঁর শরীর ভাল লাগছে না। ক্রমশ স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ছেন দেখে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ স্বামী আর ঝুঁকি নেননি। স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু কয়েকদিন ধরে চলা টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকার রাস্তা কাদামাটিতে ভরা। কোনও গাড়িও নেই যে তাতে করে নিয়ে যাবেন। অগত্যা স্ত্রীকে কাঁধে তুলে নিয়ে ওই দুর্বিষহ পথ ধরেই হাসপাতালের দিকে হাঁটা শুরু করেন আদল্যা পড়ভি।
অসুস্থ স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে এভাবে এক বৃদ্ধের মরণপণ প্রচেষ্টা ক্যামেরাবন্দি হয় এক যুবকের। এদিকে পথ যতই খারাপ হোক স্ত্রীকে নিয়ে হাঁটতেই থাকেন স্বামী। হাসপাতাল তখনও বহুদূর।
এদিকে রাস্তায় এক জায়গায় ধস নেমেছে তখন। পাথর পড়ে রাস্তা বন্ধ। ফলে স্ত্রীকে কাঁধ থেকে নামিয়ে এবার অন্য কীভাবে নিয়ে যাওয়া যায় তা খুঁজে বার করেন স্বামী। ফিরে এসে ফের তুলে নেন স্ত্রীকে। ফের শুরু হাঁটা।
কিন্তু মাঝ পথে আদল্যা পড়ভি বুঝতে পারেন কাঁধে থাকা স্ত্রী আর নিঃশ্বাস নিচ্ছেন না। তাঁকে কাঁধ থেকে নামান বৃদ্ধ আদল্যা। দেখেন স্ত্রী আর নেই। স্বামীর কাঁধেই প্রাণের শেষ নিঃশ্বাসটা ত্যাগ করেছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের পাহাড়ি এলাকা নন্দুরবরের চন্দসাইলি গ্রামে। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামেই বাস করতেন স্বামী স্ত্রী।
স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর এমন বেহাল দশা এভাবেই এক অসহায় স্বামীর শেষ লড়াইকেও নিষ্ফলা করে দিল। বিষয়টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা