আর্জি পূরণ হলেই বিয়ে, ধনুরভাঙা পণ করে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি তরুণীর
তাঁর আর্জি মানতে হবে। তবেই তিনি বিয়ে করবেন। নয়তো চিরজীবন অবিবাহিতই থেকে যাবেন। স্পষ্ট একথা জানিয়ে সটান মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন তরুণী।
একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ান তিনি। বয়স ২৬ বছর। ঝকঝকে তরুণী বিন্দু হয়তো বিয়ে করে সংসার করতেই পারতেন। কিন্তু তাঁর মন কাঁদে তাঁর গ্রামের জন্য।
তিনি নিজে গ্রামে না থাকলেও তাঁকে বেদনা দেয় তাঁর গ্রামের বেহাল কাদা মাখা পথ। বিন্দুর মতে ওকে রাস্তা বলেনা। কাদা মাটি জলে ভরা একটা দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা। যেখান দিয়ে কোনও গাড়ি চলেনা। বাইকও চলে না। যেতে পারে কেবল গরুর গাড়ি।
বিন্দুর আক্ষেপ তাঁর বাবা-মা তাঁকে গ্রামে না রেখে শহরে পড়তে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরই গ্রামে এমন অনেক মেয়ে রয়েছে যারা পঞ্চম শ্রেণির পর পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে কেবল গ্রামের রাস্তার অভাবে। কারণ গ্রাম পার করে স্কুলে যাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল তাদের কাছে।
বিকেল হয়ে গেলেই ওই পথ ধরে যাতায়াত একটা আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পথের বেহাল দশা তো রয়েছেই, সেইসঙ্গে রয়েছে আশপাশের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা জন্তু জানোয়ার। যারা যে কোনও সময় ক্ষতি করতে পারে ওই রাস্তা ধরে ধীরে এগোনো পথচারীর।
৭০ বছরের বেশি সময় ধরে কর্ণাটকের দাভানাগেরে জেলার রামপুরা গ্রামে রাস্তা বলে কিছু নেই। কাঁচা ওই কাদাজলের সরু পথই নাকি রাস্তা।
গ্রামের মেয়েরা বলেই নয়, পুরুষদের পক্ষেও এই পথ ধরে কাজে যাওয়া এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। বিন্দু তাই স্থির করেন তিনি এই সমস্যা মেটাতে কিছু একটা করবেন।
তিনি মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের ইমেল খুঁজে বার করে চিঠি পাঠান। সেই চিঠিতে গ্রামের রাস্তার বেহাল দশার কথা জানিয়ে এটাও লিখে দেন যে যদি গ্রামে পাকা রাস্তার বন্দোবস্ত না হয় তাহলে তিনি বিয়েই করবেননা।
পরে বিন্দু জানান ওটা প্রতিবাদকে শক্তিশালী করার চেষ্টা ছিল। আসল কথা ছিল গ্রামে রাস্তা তৈরি করতে হবে। চিঠিতে কাজ হয়।
কদিনের মধ্যেই ওই গ্রামে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে তাবড় আধিকারিক হাজির হন। রাস্তা তৈরির কাজও শুরু করে দেন তাঁরা।
গ্রামের সকলে এখন বিন্দু বলতে অজ্ঞান। রাস্তার কাজ কতটা এগোল তার ছবি তাঁরা পাঠান শহরে কর্মরত বিন্দুকে। তাঁর উদ্যোগে গ্রামের উন্নতিতে খুশি ২৬-এর তরুণী বিন্দুও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা