বিমানে এসে ডাকাতি সেরে বিমানেই পালাত ভিখারি সেজে ঘোরা ডাকাত
পরনে একটা নোংরা লুঙ্গি আর বহুদিনের অকাচা গেঞ্জি। এই পরেই ভিখারি সেজে পথে পথে ঘুরত সে। তারপর ডাকাতি করে চম্পট দিত বিমানে।
এ শহর তার নয়। এ শহরে সে আসত কেবল ডাকাতি করতে। আসত বিমানে চেপে। তারপর বিমানবন্দর থেকে বার হয়ে চলে আসত তার এক সঙ্গীর কাছে।
সেখানে রাখা থাকত ভিখারির পোশাক। সেই পোশাক পরে ফেলত সে। এবার বেরিয়ে পড়ত শহরের পথে। এ রাস্তা ও রাস্তা ঘুরে বেড়াত ভিখারি সেজে।
লোকজন মাঝেমধ্যে পয়সাও দিতেন। কিন্তু ভিক্ষা করার অছিলায় সে আসলে রেইকি করত শহরের একটি অঞ্চল। সেই অঞ্চল যেখানে সে ডাকাতির পরিকল্পনা করছে।
সব দেখার পর সেইমত হত পরিকল্পনা। তারপর ডাকাতি করে চম্পট দিত সে। চম্পট দিত শহর থেকে। আর ভিখারির বেশে নয়। ফের ধোপদুরস্ত পোশাক পরে বিমানেই শহর ছাড়ত এই ডাকাত।
জন্মসূত্রে বিহারের বাসিন্দা মহম্মদ রজ্জাক গত কয়েক বছর হল বাংলাদেশেই থাকে। তারপর পাসপোর্টও রয়েছে। সে বাংলাদেশ থেকে বিমানে উড়ে আসত জয়পুর। তারপর জয়পুরে ভিখারির বেশে ঘুরে ডাকাতি করে পালাত বাংলাদেশে।
এক, দুবার নয়, এমন করেই ৭টি ডাকাতি করেছে সে। সবকটাই জয়পুরে। তার ৩ জন স্ত্রী রয়েছেন। তাঁদের কেউ কারও কথা জানেন না। প্রতিটি স্ত্রীর আলাদা থাকার জায়গা। ২টি ডাকাতির মাঝে রজ্জাক যে স্ত্রীর সঙ্গে কাটাত তার সঙ্গে পরের ডাকাতির পর কাটাত না। যেত অন্য স্ত্রীর কাছে।
পুলিশ অনেকদিন ধরেই তার নাগাল পাচ্ছিল না। এদিকে কোটি কোটি টাকা ডাকাতি করে ফেলেছে সে। পুলিশ এরপর সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা শুরু করে।
সেখানে দেখা যায় যে অঞ্চলেই ডাকাতি হয় সেখানেই এক ভিখারিকে আগের কদিন ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। প্রত্যেক ক্ষেত্রে ভিখারিটি একই থাকে। সেখানেই সন্দেহ দানা বাঁধে পুলিশের।
শেষবার ডাকাতি করে রজ্জাক ট্রেনে পালাচ্ছিল। সঙ্গে এক স্ত্রীও ছিলেন। রাজস্থান থেকে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের দিকে যাচ্ছিল সে।
এ খবর পুলিশ পায়। তারপর উত্তরপ্রদেশের পুলিশের সাহায্য নিয়ে রজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়। রজ্জাক স্বীকার করেছে এবার সে কলকাতা হয়ে বাংলাদেশে চম্পট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা