দুর্গাপুজোয় এবার লোডশেডিংয়ের সম্ভাবনা
দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। আর উৎসব মানেই তো আলোর রোশনাই। কিন্তু এবার উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত ফেলে লোডশেডিংয়ের সম্ভাবনা চূড়ান্ত।
দুর্গাপুজোর জন্য করোনা আবহেও কোমর বেঁধে তৈরি বাঙালি। করোনাবিধি মেনেই আনন্দে শামিল হতে তৈরি তাঁরা। উৎসবকে আলোয় ভরিয়ে তুলতে শহরের সব রাস্তায় আলো লাগানো প্রায় সম্পূর্ণ।
কিন্তু সেই আলো যে পুজোর দিনগুলোয় সত্যিই সবসময় জ্বলতে পারবে সে বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারছেনা সেন্ট্রাল ইলেকট্রিক অথরিটি। ফলে দুর্গাপুজোর দিনগুলোয় লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকছে না।
কেন এমন অবস্থা? এর বড় কারণ কয়লার অপ্রতুলতা। এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে দেশের প্রায় অর্ধেক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩ দিনের কয়লাও মজুত নেই!
বাকি অনেক কেন্দ্রে টেনে টুনে ২২ দিনের কয়লা মজুত রয়েছে। তা যদি ব্যবহার হয়ে যায় তাহলে লোডশেডিং প্রভাব ফেলতে বাধ্য দিওয়ালীতে।
১৩৫টি এমন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশে রয়েছে যাদের কাছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লার মজুত রয়েছে ৩ দিনের মত। তারপর তাদের হাতে আর কয়লা থাকছে না। ফলে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবেনা।
তাহলে উপায়? উপায় কী তা নিয়েও কোনও কূলকিনারা পাওয়া মুশকিল হচ্ছে। কারণ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ একটু নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত ৩ মাসে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র বা গুজরাটের মত শিল্প প্রধান রাজ্যে কলকারখানায় পুরো দমে কাজ হচ্ছে। কাজ হচ্ছে দেশের অন্যান্য রাজ্যের শিল্প উৎপাদনেও। ফলে বিদ্যুতের চাহিদা ১৪ থেকে ২০ শতাংশ গত ৩ মাসে বেড়েছে।
এদিকে গত ৩ মাসেই দেশ জুড়ে বর্ষা হয়েছে। এই সময় কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলন তলানিতে গিয়ে ঠেকে। ফলে সেখান থেকেও কয়লার যোগানে প্রবল ঘাটতি রয়েছে।
অনেকে এই পরিস্থিতিতে কয়লা আমদানি করার কথা ভাবলেও তা মোটেও খুব একটা ভাল পরিকল্পনা হবেনা। কারণ বিশ্ববাজারে কয়লার আকাশছোঁয়া দাম হয়েছে। ফলে তা আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গেলে বিদ্যুতের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা অনুমেয়।
সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি তাতে উৎসবের দিনগুলো অন্ধকারে কাটাতে হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বরং এখন থেকে মানসিক প্রস্তুতি থাকা ভাল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা