গ্রেফতার স্বামী এলাকার রবিন হুড, স্ত্রী জিতলেন নির্বাচন
স্বামী আদপে কুখ্যাত চোর। তবে এলাকায় তার পরিচিতি রবিন হুডের মতই। পুলিশ তাকে গ্রেফতারও করেছে। তবে তার স্ত্রী বিপুল ভোটেই জিতলেন নির্বাচন।
একটা সময় ছিল যখন সে দিনমজুরের কাজ করত। সামান্য উপার্জনেই চলত সংসার। বোনের বিয়ের সব ঠিকঠাক করেও পাত্রপক্ষের পণের চাহিদা মেটাতে অক্ষম হওয়ায় বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর থেকে আর বিয়ে করেননি বোন।
অভাবের সংসার তবু চলে যাচ্ছিল। কিন্তু তখনই মাথায় সহজে টাকা করার ফন্দি আঁটে মহম্মদ ইরফান। স্থির করে চুরি করবে। তবে এলাকায় নয়। একদম অন্য শহরে গিয়ে সাফ করবে ধনীদের ধন।
বিহারের সীতামারির বাসিন্দা ইরফান এবার মাঝেমধ্যেই চলে যেত অন্য শহরে। কিছুদিন পর ফিরে আসত অনেক টাকাকড়ি নিয়ে। এতে তার জীবনধারণও বদলাতে শুরু করে।
নিতান্ত দরিদ্র ইরফান এক সময় জাগুয়ার চড়ে এলাকায় দাপটে ঘুরে বেড়াত। বিভিন্ন শহরে কেনা ছিল ফ্ল্যাট। ৪ জন বান্ধবীও ছিল তার। যাদের সঙ্গে তার অতিঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যে ১ জন আবার ভোজপুরী সিনেমার নায়িকা।
দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, গোয়া, নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম সহ বিভিন্ন শহরে ফাঁকা বাড়ি পেলে সে হাত সাফাই করত সেখানে। তার বিরুদ্ধে ৪০টি এফআইআর ছিল। কিন্তু পুলিশ কিছুতেই তার নাগাল পাচ্ছিল না।
উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে ১ কোটি টাকার গয়না ও নগদ চুরি করার পর তার পিছনে আদাজল খেয়ে পড়ে পুলিশ। অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাকে তারই বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে তারা।
ইরফান গ্রেফতার হলেও তার সমাজসেবামূলক কাজ কম ছিলনা। সীতামারির যোগিয়া পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৫টি গ্রামে ইরফান নিজের খরচে রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে। গ্রামের মধ্যেও তৈরি করেছে পাকা পথ।
গ্রামবাসীদের সমস্যা মেটাত সে। ফলে তার এলাকায় পরিচিতি যে জায়গায় পৌঁছেছিল তা রবিন হুডের সমান। ফলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার পর তার অর্থ রোজগারের অন্যায় উপায় সম্বন্ধে এলাকার মানুষ জানতে পারেন।
কিন্তু ইরফানের জনপ্রিয়তা তাতে নষ্ট হয়নি। বরং সেই জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে ইরফানের স্ত্রী গুলশন পরভিন ডিসট্রিক্ট কাউন্সিল মেম্বার নির্বাচনে দাঁড়ান। জেতেন বিপুল ভোটে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা