আচমকাই বাড়ল ঝর্ণার জল, প্রাণ নিয়ে টানাটানি পাত্রপাত্রীর
বিয়ের আগে পাত্রপাত্রী কোনও সুন্দর জায়গায় গিয়ে ফোটোশ্যুট করবে, এটা এখন নয়া ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তা যে এমন ভয়ংকর বিপর্যয় ডেকে আনবে তা কে জানত।
কদিন পরেই বিয়ে। তার আগে হবু বরকনে প্রি-ওয়েডিং ফোটোশ্যুট করে থাকেন। এটা এখন নব্য প্রজন্মের কাছে বিয়ের আগে এক আকর্ষণীয় অধ্যায়ে পরিণত হয়েছে। যথেষ্ট খরচ করে পেশাদার ফটোগ্রাফার দিয়ে হয় এই ফোটোশ্যুট। এজন্য লোকেশন স্থির হয়। যা এক কথায় চোখ জুড়োনো হতে হবে। সেখানে দারুণ সব পোশাকে চলে ফোটোশ্যুট পর্ব।
অনেকে পোশাক পরিবর্তন করতে থাকেন ফোটোশ্যুটের মাঝে। সেটাই হচ্ছিল রাজস্থানের বিখ্যাত ঝর্ণা চুলিয়ার সামনে। চুলিয়া ঝর্ণার ধারে অনেক পর্যটকও হাজির হন।
২৯ বছরের আশিস গুপ্তা তাঁর হবু স্ত্রী ২৭ বছরের শিখাকে সঙ্গে করে এই ঝর্ণাকে পিছনে রেখে তার বয়ে যাওয়া জলের মাঝে একটি পাথরের ওপর চড়ে ছবি তুলছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের পরিবারের আরও ২ সদস্য।
চারধার দিয়ে তিরতির করে বয়ে যাচ্ছে ঝর্ণার জল। মাঝে মাঝে বড় ছোট পাথর। যার ওপর দাঁড়িয়ে বা বসে ছবি তোলার একটা রোমাঞ্চ অবশ্যই রয়েছে। এতে ছবিটাও দারুণ হয়। কিন্তু ঠিক সে সময় কাছের প্রতাপ সাগর ড্যাম থেকে জল ছাড়া হয়।
লকগেট খুলে দেওয়ায় আচমকাই জল বেড়ে যায় চুলিয়া ঝর্ণায়। মুহুর্তে জল বাড়তে থাকে। যে পাথরের ওপর পাত্রপাত্রী বসে ছিলেন সেখানেও চারপাশে জল বেড়ে যায়। ফলে আটকে পড়েন তাঁরা।
যদিও ফটোগ্রাফার কোনওক্রমে নিজেকে বাঁচাতে পারেন। কিন্তু তাঁর ক্যামেরা জলে ভেসে যায়। তাঁর দাবি, তিনি আশিস ও শিখাসহ তাঁদের পরিবারের ২ সদস্যকে চলে আসার জন্যও বলেন। কিন্তু তাঁর বুঝেই উঠতে পারেননি তাঁদের জন্য কী বিপদ অপেক্ষা করছে।
জল এদিকে বেড়েই চলেছে। জলের যা স্রোত তাতে পাথরেরও ওপর দিয়ে জল একবার বইতে শুরু করলে আর রক্ষে নেই। ফটোগ্রাফার সময় নষ্ট না করে স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেন। তারা দ্রুত সেখানে হাজির হয়ে পাত্রপাত্রী সহ ৪ জনকে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে।
৩ ঘণ্টা ধরে চলে এই লড়াই। অবশেষে আশিস, শিখা ও বাকি ২ জনকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়ে ফেরান উদ্ধারকারীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা