মিথ্যা মামলা প্রমাণে কেটে গেল ২৬ বছর, যৌবন ঢলল প্রৌঢ়ত্বে
২৬ বছর পর মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেলেন এক ব্যক্তি। অস্ত্র আইনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কেবল জীবন থেকে হারিয়ে গেল ২৬টি বছরের শান্তি।
পেশায় তিনি একজন কৃষক। আর পাঁচটা সাধারণ কৃষক পরিবারের মতনই নুন আনতে পান্তা ফুরোয় জীবন। কঠোর সংগ্রামকে সঙ্গী করে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে হাসিমুখেই দিন কাটাচ্ছিলেন মহম্মদ সালাউদ্দিন।
এরমধ্যে হঠাৎ করে পরিবারে নেমে আসে বিপর্যয়। অস্ত্র আইনে মহম্মদ সালাউদ্দিনকে গ্রেফতার করে মুজফ্ফরনগর থানার পুলিশ। সালটা ১৯৯৫, সালাউদ্দিনের বয়স তখন ৩৬ বছর। ৪টি ১২ বোরের গুলি রাখার অপরাধে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনায় নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে দাবি করেন সালাউদ্দিন। কিন্তু তাঁর সেই দাবি ধোপে টেকেনি। ২০ দিন জেলবন্দি থাকতে হয় তাঁকে। তারপর জামিন মিললেও আদালত আর বাড়ি করা চলতেই থাকে।
এরপর ২৬ বছর ধরে চলে এই ৪টি গুলি রাখার মামলা। এই ২৬ বছরে ২০০-র ওপর শুনানিতে হাজির হতে হয় সালাউদ্দিনকে। মামলার জন্য মানসিক চাপের পাশাপাশি আইনি প্রক্রিয়ার খরচ চলতেই থাকে।
অবশেষে মহম্মদ সালাউদ্দিনের জীবনে এল সেই খুশির দিন। দীর্ঘ ২৬ বছর লড়াইয়ের পর আদালত তাঁকে নিরপরাধ হিসেবে ক্লিনচিট দিল।
আদালত আর ঘর করতে করতে কবে যে মহম্মদ সালাউদ্দিন যৌবন থেকে প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছে গেলেন তার হিসেব রাখতে পারেননি। এই ২৬ বছরে ক্রমাগত মানসিক চাপ তাঁকে শান্তিতে সংসারটাও করতে দেয়নি।
সন্তানেরা বড় হয়েছে তাঁর সামনেই। কিন্তু তাদের সময় দিতে পারেননি সালাউদ্দিন। রুটিরুজির ব্যবস্থা আর আদালতের চক্করে ২৬ বছর কাটিয়ে ৬২ বছরে পৌঁছে আদালত থেকে ক্লিনচিট পেলেন তিনি।
সালাউদ্দিনের আক্ষেপ তাঁর আত্মীয়রাই তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেয়। আর সেই মিথ্যা প্রমাণ করতে করতেই তাঁর জীবনের মূল্যবান বছরগুলো হারিয়ে গেল। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা