কুখ্যাত ডাকাতের পছন্দের হাতি জয় সিংয়ের জীবনে নাটকীয় মোড়
কুখ্যাত ডাকাত দাদুয়ার বড় পছন্দের ছিল জয় সিং। জয় সিংকে আদরে বড় করেছিল দাদুয়া। এনকাউন্টারে দাদুয়ার মৃত্যুর পর জয় সিংয়ের জীবনে এল একের পর এক নাটকীয় মোড়।
২০০২ সালে ছোট অবস্থায় কিনেছিল কুখ্যাত ডাকাত দাদুয়া। নাম দিয়েছিল জয় সিং। তারপর দাদুয়ার আদর যত্নে বড় হতে থাকে জয় সিং। দাদুয়া তাকে এতটাই ভালবাসত যে কখনও তার পিঠে পর্যন্ত উঠে বসেনি।
২০০৭ সাল পর্যন্ত দাদুয়ার আদরে বড় হলেও দাদুয়া এনকাউন্টারে মারা যায় ওই বছর। উত্তরপ্রদেশ এসটিএফ তাকে গুলি করে মারার পর দাদুয়ার ছেলে বীর সিংয়ের কাছেই থাকত জয় সিং। কিন্তু স্থানীয়রা জানাচ্ছেন যে আদয় দাদুয়া তাকে দিত তা বীর দিত না। বরং সারাক্ষণ চেন দিয়ে বেঁধে রাখত তাকে।
যত্নের যথেষ্ট অভাব ছিল। হয়তো সেজন্যই কিছুটা রেগে থাকত জয় সিং। বুন্দেলখণ্ডের বাসিন্দা জয় সিং মাঝেমধ্যেই হানা দিত চিত্রকূটে। সেখানে বাড়িঘর ভেঙে তছনছ করত। মানুষকেও তাড়া করত।
সেই জয় সিংকে কিছুদিন আগে বেচে দেওয়ার বন্দোবস্ত হয়েছিল। তাকে বেআইনিভাবে গুজরাটে বেচে দেওয়ার সব স্থির হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু তাকে যখন বেচার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন মধ্যপ্রদেশের সাতনার কাছে বীর সিংকে আটকায় পুলিশ। তার কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়।
হাতিটি যে তার তারও প্রমাণপত্র চাওয়া হয়। যা দেখাতে পারেননি বীর। ফলে তার কাছ থেকে জয় সিংকে বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ।
যখন তাকে বেআইনিভাবে বেচে দেওয়ার হাত থেকে উদ্ধার করা হয় তখন জয় সিং অত্যন্ত দুর্বল ও অসুস্থ। তাকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জয় সিংকে বন দফতরের হাতে তুলে দেয়।
বন দফতর তার দেখভাল শুরু করে। অক্টোবরে পাওয়ার পর জয় সিংয়ের চিকিৎসা করিয়ে তাকে আস্তে আস্তে সুস্থ করে তুলছেন বন কর্মীরা।
আগামী জানুয়ারিতে ২৫ বছরের জয় সিংয়ের তালিম শুরু হবে। তারপর তাকে নিয়োগ করা হবে একদম নতুন ভূমিকায়।
ডাকাতের হাতি আগামী দিনে দুধওয়া টাইগার রিজার্ভে জঙ্গল প্রহরার কাজে নিয়োজিত হতে চলেছে। মাত্র ২৫ বছরের জীবনে জয় সিংয়ের জীবন বারবার মোড় নিয়েছে। এবার নতুন ভূমিকায় জয় সিং কতটা সফল হয় সেটাই দেখার। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা