অভিনব সৃষ্টি, দেশে প্রথম তৈরি হল মাটি আর ভেষজ গাছগাছড়ার বাড়ি
মানুষের সৃষ্টি সর্বদাই মানুষকে হতবাক করেছে। নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। যেমন দেশে এই প্রথম তৈরি হল মাটি আর ভেষজ গাছগাছড়ার বাড়ি।
ভাস্কর মন তাঁর পরিবারের রক্তে আছে। সেই সূত্রে ছোট থেকে এই কলার প্রতি তাঁর আকর্ষণ ছিলই। তাঁর পরিবারে মন্দির নির্মাণের একটা ইতিহাস রয়েছে। তবে তিনি একটু অন্যভাবে ভাবতে চেয়েছেন। তিনি এমন একটি বাড়ির স্বপ্ন দেখেছিলেন যা তৈরি হবে মাটি আর ভেষজ গাছগাছড়া দিয়ে।
ভাবনা বা কল্পনা এক জিনিস আর তার বাস্তব রূপায়ণ আর এক জিনিস। এসব দিয়ে বাড়ি বানালে যে তা আদৌ টিকবে সে সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারনা তাঁর ছিলনা।
এই স্বপ্ন বুকে করে তিনি পৌঁছে যান তাঁর এক বন্ধুর কাছে। জ্যাকব থাঙ্কাচান নামে ওই বন্ধু তাঁর কাছে সব শোনার পর এক কথায় নিজের একটি জমি তাঁকে এই বাড়ি বানানোর জন্য দিয়ে দেন।
শীলা সন্তোষ কিন্তু তখনও নিশ্চিত নন যে বাড়ি টেকসই হবে কিনা। জমি পেয়ে যাওয়ায় অনেকটা নিশ্চিন্ত মনে তিনি এবার বাড়ির স্থায়িত্ব নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন।
৪০ জন আয়ুর্বেদ ও ভেষজ গাছের বিশেষজ্ঞের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে শীলা মাটি ও ভেষজ গাছগাছড়া মিশিয়ে একটি মণ্ড বানিয়ে তার স্থায়িত্ব পরীক্ষা করে দেখেন। তারপর সব দিক থেকে নিশ্চিত হওয়ার পর শুরু হয় বাড়ি তৈরির কাজ।
বাড়িটি তৈরি হয় কেরালার তিরুবনন্তপুরম শহর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে আদুর নামে একটি জায়গায়। সেখানেই ২০০ বর্গ ফুট এলাকায় জন্ম নেয় এই অনন্য সৃষ্টি।
কাঠ, টালির চালার পাশাপাশি এই বাড়ির দেওয়াল, ঘর সবই তৈরি হয়েছে মাটির সঙ্গে ৬৫ রকমের ভেষজ গাছগাছড়ার মিশ্রণ দিয়ে।
এ বাড়ি ভূভারতে এই প্রথম তৈরি হল। যেখানে ঘরে কোনও পাখা লাগেনা, এতটাই ঠান্ডা হয় ঘরগুলি। বাড়িতে ঢুকলেই ভেষজ গাছের গন্ধে ভরে যায় মন। সে গন্ধ সব সময় বজায় থাকে ওই বাড়ি জুড়ে।
তবে এই অনন্য সৃষ্টিতেই থেমে যাননি শীলা। তিনি এই বাড়িটিকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে শীলার এই বাড়ি এখন এক দেখার জিনিস হয়ে গিয়েছে। বহু মানুষ এই মাটি আর ভেষজ গাছের বাড়ি চাক্ষুষ করতে ভিড় জমাচ্ছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা