মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও ৩০ জন বাসযাত্রীকে বাঁচিয়ে দিয়ে গেলেন বাসচালক
তিনি নিজে মারা গেলেন। কিন্তু বাঁচিয়ে দিয়ে গেলেন ৩০ জন বাসযাত্রীকে। মৃত্যুর দরজায় দাঁড়িয়েও তাঁর বাসযাত্রীদের জীবন বাঁচানোর এই ঘটনা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে অনেকের কাছে।
১২ বছর হয়ে গেল সরকারি বাসের চালক তিনি। অত্যন্ত দক্ষ চালক ছিলেন তিনি। মাত্র ৪৪ বছর বয়সে তাঁর অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁর সহকর্মীরা।
তবে তাঁর সহকর্মী থেকে পরিবহণ দফতরের তাবড় আধিকারিকও মেনে নিচ্ছেন তিনি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তাঁর শেষ মুহুর্তের সিদ্ধান্তের জন্য।
বৃহস্পতিবার সকালে তামিলনাড়ুর আরাপ্পালায়ম থেকে বাস নিয়ে বার হন ৪৪ বছরের আরুমুগম। গন্তব্য ছিল কোদাইকানাল। বাসে ৩০ জন যাত্রী ছিলেন।
সকাল ৬টা ২০ মিনিটে বাস ছাড়ে। সকালের রাস্তায় বাস এগোচ্ছিল বেশ গতিতেই। হঠাৎ বাসের কন্ডাক্টরকে ডাকেন চালক আরুমুগম। কন্ডাক্টরকে জানান তিনি আর সহ্য করতে পারছেন না যন্ত্রণা। তাঁর বুকে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে।
ওই অবস্থায় চলন্ত বাসের স্টিয়ারিং যে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব তা বুঝতে সময় লাগেনি কন্ডাক্টরের। ওই অবস্থায় লুটিয়ে পড়ার ঠিক আগের মুহুর্তেও সব কষ্টকে তুচ্ছ করে আরুমুগম অত্যন্ত পটুতার সঙ্গে বাসটিকে রাস্তার ধারে দাঁড় করিয়ে দেন। তারপর লুটিয়ে পড়েন নিজের সিটেই।
কন্ডাক্টর দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে খবর দেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। বাসেই মৃত্যু হয় আরুমুগমের। দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। খবর দেওয়া হয় বাড়ির লোকজনকে।
চিকিৎসকদের ধারনা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয় আরুমুগমের। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পরও যে তিনি ওই যন্ত্রণা নিয়ে গতিতে থাকা বাসটিকে ঠিক করে রাস্তার ধারে দাঁড় করান, তা জেনে বাসযাত্রীরাও আপ্লুত।
তাঁরা এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকাহতও। তবে নিজে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও যে আরুমুগম ৩০ জন বাসযাত্রীর প্রাণ বাঁচালেন তার তারিফ সকলেই করছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা