প্রেমিকের পরীক্ষা নিতে চিকিৎসক সেজে সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে পালাল মহিলা
সিনেমার গল্পকেও হার মানায় বাস্তবের এই শিশু চুরি। প্রেমিক ও তাঁর পরিবারের পরীক্ষা নিতে চিকিৎসক সেজে সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে পালাল এক মহিলা।
গত বৃহস্পতিবার ঘড়িতে তখন বিকেল ৩টে ২০। হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে হাজির হয় এক মহিলা। পরনে চিকিৎসকের পোশাক। চিকিৎসক তো রাউন্ডে আসতেই পারেন।
ওই মহিলা এসে দাঁড়ায় এক মহিলা ও তাঁর ৩ দিনের শিশুর পাশে। শিশুকে পরীক্ষা করার পর ওই মহিলা শিশুটির বাবাকে ডেকে জানায় শিশুটির জন্ডিস ধরা পড়েছে। তাকে আরও পরীক্ষার জন্য নিয়ে যেতে হবে।
হাসপাতালেই চিকিৎসক চাইছেন শিশুকে আরও পরীক্ষার জন্য নিয়ে যেতে। সেখানে আপত্তির কিছু থাকতে পারেনা। এদিকে ঘুম ভেঙে শিশুকে না পেয়ে তার মা যখন খোঁজ শুরু করেন তখন জানা যায় এমন কোনও চিকিৎসক আসেননি।
হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক ওয়ার্ডে সেই সময় ঢোকেননি। সকলেই বুঝতে পারেন শিশুটিকে চুরি করা হয়েছে। দ্রুত পুলিশে খবর যায়। পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
ঘটনার ২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্তে নেমে পুলিশ হানা দেয় স্থানীয় একটি হোটেলে। সেখানেই একটি ঘরে তখন শিশুটিকে নিয়ে ৩৩ বছরের নীতু রাজ ছিল।
পুলিশ জানতে পারে ওই মহিলাই চিকিৎসক সেজে শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে চুরি করে এই হোটেলে এসে ওঠে। কিন্তু কেন শিশু চুরি?
নীতু পুলিশকে যে কাহিনি জানিয়েছে তা পুলিশকেও হতবাক করে দিয়েছে। শিশু বিক্রির মত পরিকল্পনা তার ছিলনা। নীতু চেয়েছিল তার প্রেমিক ও প্রেমিকের পরিবারের পরীক্ষা নিতে।
আসলে নীতুর বিয়ে হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত এক ব্যক্তির সঙ্গে। কেরালার তিরুবনন্তপুরমের বাসিন্দা নীতু এখানেই থাকত। এখানে তার সঙ্গে ইব্রাহিম নামে এক লরি চালকের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।
২ জনের সম্পর্ক গভীর ঘনিষ্ঠতায় পৌঁছয়। ২ বছর স্বামীকে লুকিয়ে চুটিয়ে সম্পর্ক চলার পর নীতু সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ে। পরে অবশ্য সে গর্ভপাত করিয়ে নেয়। কিন্তু সে কথা ইব্রাহিমকে জানতে দেয়নি।
নীতু শিশুটিকে চুরি করে হোটেলে গিয়ে ইব্রাহিম ও তার পরিবারের সঙ্গে ভিডিও কলে যুক্ত হয়। তারপর শিশুটিকে দেখিয়ে জানায় সে ইব্রাহিমের সন্তানের জন্ম দিয়েছে।
নীতু চেয়েছিল ইব্রাহিম তাকে কোনওভাবে যাতে ছাড়তে না পারে। সেজন্যই হাসপাতাল থেকে সে শিশুটিকে চুরি করে ভিডিও কলে দেখানোর জন্য।
পুলিশ নীতুকে গ্রেফতার করেছে। ইব্রাহিমকেও গ্রেফতার করেছিল। তবে পরে পুলিশ বুঝতে পারে এই ঘটনায় ইব্রাহিমের কোনও হাত নেই। তাই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা