গৃহহীন দরিদ্রদের মসিহা তিনি, প্রতিদিন তাঁদের খাওয়াচ্ছেন ঠেলাগাড়ির চাওয়ালা
পেশায় তিনি চা বিক্রেতা। স্থানীয়দের কাছে চাওয়ালা। কালক্রমে তিনি এখন আশপাশের গৃহহীন দরিদ্রদের মসিহা হয়ে উঠেছেন নিজের অজান্তেই।
চা বিক্রি করেই সংসার চলে তাঁর। একটি হাতে ঠেলা গাড়ি নিয়ে সকাল হলেই তিনি বেরিয়ে পড়েন চা বিক্রি করতে। একটি গলির মোড়ে তাঁর ঠেলা দাঁড় করিয়ে বিক্রি করেন চা। চা, বিস্কুটের পাশাপাশি বিক্রি করেন ছাতু ও ফলের রস। এসব বেচে সারাদিনে যা রোজগার হয় তা নিয়ে তিনি বাড়ি যান। এমনটাই হওয়ার ছিল। কিন্তু সেখানে একটু বৈচিত্র্য রয়েছে।
তিনি শুধুই নিজের পরিবারের জন্য রোজগার করেননা। দিবারাত্র চা বিক্রি করে তাঁর যেটুকু রোজগার হয় তা দিয়ে তিনি এলাকার ২০ থেকে ২৫ জন দরিদ্র গৃহহীন মানুষের সেবা করেন। তাঁদের তিনি খুব বেশি কিছু না করতে পারলেও চা বিস্কুট প্রতিদিন খাওয়ান। খাওয়ান ছাতুর সরবত।
চা বিস্কুট খেতে তাঁর দোকানে হাজির হন স্থানীয় দরিদ্র মানুষজন। এটুকুই বা তাঁদের কে খাওয়ায়! আবার শীতের সময় প্রতিদিন এসব মানুষের জন্য নিজেই কাঠকুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন ওই চা বিক্রেতা। উপহার দেন কম্বল, সোয়েটার, শাল। যাতে ওই মানুষগুলো কনকনে ঠান্ডায় কষ্ট না পান।
মাঝেমধ্যে নিজের পকেট খরচ করে এটা ওটাও খাওয়ান সঞ্জয় চন্দ্রবংশী। বিহারের গয়ার গৌতম বুদ্ধ মার্গের গোল পাথর মোড়ে তিনি তাঁর ঠেলা গাড়ি নিয়ে চা বিক্রি করেন। এখন তাঁকে স্থানীয় দরিদ্র মানুষজন সকলে চেনেন।
সঞ্জয়ের দাবি তিনি এই অভ্যাস পেয়েছেন তাঁরা বাবা ও ঠাকুরদার কাছ থেকে। তাঁরাই এই মানবসেবার কথা তাঁকে শিখিয়েছেন। এখন এমন হয়েছে যে সঞ্জয় তাঁর চায়ের ঠেলা নিয়ে হাজির হওয়ার আগেই সেখানে ভিড় জমান এলাকার ভিক্ষুক, দরিদ্র, বাসস্থানহীন মানুষজন।
তাঁরা জানেন সঞ্জয় আসা মানে তাঁদের কপালে চা, বিস্কুট, কেক বা ছাতুর সরবত জুটবে। বিনা অর্থব্যয়ে তাঁদের এমন করে কেই বা খাওয়ায়! — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা