মেয়েদের বিয়ে দিতে বাড়ি বেচে বাসস্ট্যান্ডে ঠাঁই বৃদ্ধের, এগিয়ে এলেন না মেয়েরাও
এক বৃদ্ধের পরিণতির কথা শুনে চোখে জল আসছে দেশের অনেকের। যে মেয়েদের বিয়ে দিতে তাঁর এই দশা তাঁরাও এগিয়ে এলেন না বাবাকে দেখতে।
৫ বছর আগেই তাঁর স্ত্রী মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। কিন্তু মাথার ওপর ২ মেয়ে। ২ মেয়ের বিয়ে তাঁকেই দিতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে ধার নিতে হয় তাঁকে।
সেই টাকায় ২ মেয়ের বিয়ে দেন ভালভাবেই। কিন্তু পকেট একদম খালি হয়ে যায়। এদিকে ধার মেটানোর জন্য চাপ বাড়ছিল। ফলে বাধ্য হয়ে জীবনের শেষ সম্বল নিজের বাড়িটা বিক্রি করতে বাধ্য হন ৬১ বছরের মানুষটি।
বাড়ি বিক্রির পর তাঁর আর মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলনা। অগত্যা কয়েকটি জামাকাপড়, একটি টিফিন বক্স আর কয়েকটি জলের বোতল হাতে নিয়ে মাদাসামি নামে ওই ব্যক্তি হাজির হন বাড়ির কাছের একটি বাস স্ট্যান্ডে।
না বাসে চড়ে কোথাও যেতে নয়। রাস্তার ধারের সিমেন্ট বাঁধানো বাস স্ট্যান্ডটা হয়ে ওঠে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা। সেখানেই এক কোণায় ঠাঁই হয় তাঁর।
হাতে একটাও টাকা নেই। তাই ভিক্ষাই একমাত্র পথ হয়ে ওঠে। যা ভিক্ষা করে হাতে পান তাই দিয়ে পেট ভরান মাদাসামি।
হাতে কাজ নেই। মনরেগায় যে কাজ করবেন, তারও উপায় নেই। স্থায়ী ঠিকানা না থাকলে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট হচ্ছেনা। আর মনরেগায় কাজের টাকা ব্যাঙ্কেই আসে।
যদিও আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আর রেশন কার্ড রয়েছে বৃদ্ধের। যে পিতা তাঁর জীবনের সর্বস্ব দিয়ে ২ মেয়ের বিয়ে দিলেন সেই মেয়েরাও এখন মুখ ফিরিয়েছেন বাবার দিক থেকে।
মেয়েরা খোঁজও নেন না বাবার। তামিলনাড়ুর তেনকাসি জেলার আনাইপ্পাপুরম গ্রামের বাসিন্দা মাদাসামির এই করুণ কাহিনি শুনে জেলা প্রশাসন এখন চেষ্টা করছে যাতে ৬১ বছরের ওই হতভাগ্য বৃদ্ধ কোথাও কিছু কাজ করে গ্রাসাচ্ছাদনের বন্দোবস্তটুকু করতে পারেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা