খাড়াই পাহাড়ের ঢালে পাথরের খাঁজে ২ দিন বসে কাটালেন যুবক
টানা ২ দিন একটি অপরিসর পাথরের খাঁজে কোনওক্রমে প্রায় ঝুলন্ত অবস্থায় আটকে রইলেন এক পর্বতারোহী যুবক। অসহায় অবস্থায় আটকে থাকার পর তাঁকে উদ্ধার করা হয়।
গত সোমবার আরও ২ পর্বতারোহী বন্ধুকে নিয়ে একদম খাড়াই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উপরে উঠতে শুরু করেন ওই যুবক। কিছুটা ওঠার পর ওই ২ বন্ধু বুঝতে পারেন যে এতটা খাড়াই পাহাড়ে তাঁরা উঠতে পারবেননা। অগত্যা তাঁরা নেমে আসেন। কিন্তু পাহাড়ের চুড়োয় পৌঁছনোর অদম্য জিদ নিয়ে ওঠা চালিয়ে যান আর বাবু। তাঁর জিদ সাফল্যও পায়।
পাহাড়ের চুড়োয় পৌঁছন তিনি। কিন্তু চুড়ো ছোঁয়ার পরই তাঁর পা হড়কে যায়। সোজা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে হড়কে নিচে নামতে থাকেন তিনি।
নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে প্রায় ২৫০ ফুট হড়কানোর পর পাহাড়ের একটি খাঁজ চেপে ধরেন তিনি। ছোট অপরিসর খাঁজ। ঢালের গায়ে ছোট্ট একটা পাহাড়ের ফাঁক। সেখানেই কোনওক্রমে নিজেকে বাঁচিয়ে উঠে বসেন তিনি।
ওখানে বসাটাই ছিল কঠিন কাজ। এতটাই কম জায়গা। এদিকে যেখানে বসে আছেন তার চারধারে একদম খাড়াই পাহাড়ের গা। ফলে না তা বেয়ে উপরে ওঠা যাবে, না তা বেয়ে নামা যাবে। কার্যত এই পাথরের খাঁজে মৃত্যুর অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় ছিলনা।
কেরালার মালামপুঝা এলাকার চেরাদ পাহাড়ের ঢালে বসে আর বাবু বুঝতেই পারছিলেননা তাঁর কি করা উচিত। বহু দূর দূর পর্যন্ত মানুষের দেখা নেই। কিন্তু তাঁর এই হারিয়ে যাওয়ার খবর পৌঁছয় প্রশাসনের কাছে।
তাঁর খোঁজে নামে ভারতীয় সেনার একটি দল। তারা মঙ্গলবার সারারাত ধরে হেঁটে পৌঁছয় ওই দুর্গম পাহাড়ের কাছে। বুধবার ভোরের আলো ফুটতেই শুরু হয় উদ্ধারকাজ।
কাজে লাগানো হয় ড্রোন, ক্যামেরা সহ অন্য আধুনিক প্রযুক্তি। তারপরও এটা স্থির করা যাচ্ছিল না আর বাবুকে নিচের দিকে নামানো হবে নাকি উপরে টেনে তোলা হবে।
অবশেষে ২ জন সেনাকর্মী খাড়াই পাহাড়ের উপর থেকে ঢাল বেয়ে নিচে নেমে আসেন দড়ির সাহায্যে। তারপর আর বাবুকে টেনে অতিসন্তর্পণে উপরে তুলে নিয়ে যান। এই উদ্ধারে বেলা হয়ে যায়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা