নিজের অঙ্গ দিয়ে বৌমাকে নতুন জীবন দিলেন শ্বশুর
শ্বশুরবাড়িতে বধূকে নিয়ে নানা হতাশাব্যঞ্জক ঘটনার কথা আকছার ভরে থাকে খবরের কাগজের পাতায়। কিন্তু এই ঘটনা হয়তো সব শ্বশুরবাড়ি ও বৌমার সম্পর্ককে অন্য পাঠ দেবে।
শ্বশুরবাড়ি নিয়ে অনেক মহিলার অভিযোগ থাকে। অন্যদিকে বৌমাকে নিয়ে পরিবারেও নানা অশান্তি। এমন ঘটনা অলিতে গলিতে কান পাতলেই শোনা যায়।
একটি মেয়ের বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে আদর যত্ন পেলে অনেকেই বলে থাকেন ভাগ্য করে একটা শ্বশুরবাড়ি নাকি তাঁর জুটেছে। কিন্তু এটাই তো স্বাভাবিক হওয়া উচিত। এর জন্য ভাগ্যের প্রয়োজন হবে কেন!
আর সেই বার্তাই এবার পৌঁছে দিলেন এক শ্বশুর মশাই। বাড়িতে আসা বৌমা যে মেয়ের চেয়ে কোনও অংশ কম নন, সন্তানের চেয়ে কোনও অংশে কম নন তা দেখিয়ে দিলেন এক প্রৌঢ়।
৬ মাস আগের কথা। ২৫ বছরের এক তরুণী গৃহবধূর কিডনির সমস্যা দেখা দেয়। তাঁর মূত্রত্যাগ বন্ধ হয়ে যায়। শরীরের নানা অংশ ফুলে যেতে শুরু করে।
চিকিৎসকেরা এই অবস্থায় ডায়ালিসিসের পরামর্শ দেন। তাও আবার আইসিইউতে রেখে। কিন্তু তাঁরা এটাও জানিয়ে দেন এভাবে বেশি দিন চলবে না। দ্রুত ওই তরুণীর একটি কিডনি প্রতিস্থাপনের দরকার। কারণ তাঁর ২টি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে।
অনেক চেষ্টা করেও কিডনি পাওয়া না যাওয়ায় ওই তরুণীর শ্বশুর মশাই এগিয়ে আসেন। তিনি জানান তিনি বৌমাকে তাঁর একটি কিডনি দান করতে চান। বৌমাকে সুস্থ করাই এখন তাঁর একমাত্র লক্ষ্য।
এক প্রৌঢ়ের বৌমাকে বাঁচানোর জন্য এই উদ্বেগকে সম্মান জানিয়ে চিকিৎসকেরা কিডনি প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু দেখা যায় প্রৌঢ়ের রক্তের গ্রুপ বি পজিটিভ আর বৌমার ও পজিটিভ। রক্তের গ্রুপ না মেলায় সমস্যা তৈরি হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা ঝুঁকি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
গত ডিসেম্বরে এই প্রতিস্থাপন যখন সংঘটিত হতে চলেছে, তখনই আবার নতুন সমস্যা তৈরি হয়। ওই তরুণী অসুস্থ হন। অবশেষে গত ২ ফেব্রুয়ারি মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে এই প্রতিস্থাপন সংঘটিত হয়।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন অন্য গ্রুপের রক্ত হলেও বিশেষ পদ্ধতি মেনে কিডনি প্রতিস্থাপনের পর এখন শ্বশুর ও বৌমা ২ জনই খুব ভাল আছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা