আমগাছটার দিকে তাকিয়ে ৯০ বছরের বৃদ্ধের প্রতিটি দিনই ভ্যালেন্টাইনস ডে
বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে ভ্যালেন্টাইনস ডে। কত তরুণ হৃদয়ে আজ তুফান উঠল। কত গোলাপ বিনিময় হল। তবু নিঃশব্দে ভালবাসার অমর কীর্তি রচনা করলেন ৯০-এর বৃদ্ধ।
দিনটা ভালবাসার। দিনটা ১৪ ফেব্রুয়ারি। দিনটা ভ্যালেন্টাইনস ডে। আজ ক্যালেন্ডারও বলছে বসন্ত এসে গেছে। পয়লা বসন্তে এদিন ভালবাসার ছোঁয়ায় কতই তরুণ হৃদয়ে ঝড় উঠল। কত উপহার, গোলাপ, ভালবাসার কথা বিনিময় হল বিশ্বজুড়ে।
তবে আজও বোধহয় অব্যক্ত প্রেম সবকিছুকে হারিয়ে দিতে পারে। সে প্রেমের ভ্যালেন্টাইনস ডে দরকার পড়ে না। বছরের সব কটা দিনই ভ্যালেন্টাইনস ডে। প্রতিটি ক্ষণই ভালবাসার। আর তা যে কতটা সত্যি তা প্রমাণ করে দিয়েছে এক ৯০ বছরের বৃদ্ধের স্ত্রীর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা।
বিহারের সীমাঞ্চল জেলার পূর্ণিয়ার সিপাহিটোলা এলাকার বাসিন্দা ভোলানাথ অলোক। ৯০টি বসন্ত পার করেছেন এই বৃদ্ধ। কিন্তু বুকে আজও ভরে আছে প্রেম সুধা। আজও স্ত্রী পদ্মারানির প্রতি ভালবাসা এতটুকু কমেনি তাঁর।
সেই ৩২ বছর আগে স্ত্রী বিয়োগ হয়েছে ভোলানাথের। সেদিন স্ত্রীর প্রথা মেনেই দাহকার্য হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু ভালবাসা একটুকুও পোড়েনি। বরং অব্যক্ত প্রেম ভোলানাথের হৃদয়কে আরও প্রেমময় করে তোলে।
ব্যথিত হৃদয়ে সেদিন স্ত্রীর চিতাভস্ম একটি কলসে ভরে নিয়েছিলেন ভোলানাথ। তারপর সেটিকে সযত্নে এনে তাঁর বাড়ির মধ্যে থাকা একটি আমগাছে টাঙিয়ে দেন।
এমনভাবে তা রক্ষা করেন যাতে সেটির এতটুকু ক্ষতি না হয়। এভাবেই ওই কলসের দিকে তাকিয়ে স্ত্রীকে আজও একইভাবে ভালবাসেন ভোলানাথ। সে ভালবাসা বলে বোঝানো যায়না, উপহার দিয়ে ব্যক্ত হয়না, গোলাপে সীমায় আটকে থাকেনা।
বৃদ্ধ ভোলানাথ পরিবারের সকলের কাছে একটিই অনুরোধ করেছেন, তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সঙ্গে যেন স্ত্রীর ওই চিতাভস্মের কলস বিসর্জন দেওয়া হয়। অবশ্যই একসঙ্গে।
সেদিন হয়তো ভোলানাথ ফের মিশে যাবেন স্ত্রীর সঙ্গে। এ লোকে না হোক অন্য কোথাও, অন্য কোনওখানে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা