১৪টি বউ, ১৩টি ব্যাঙ্কে জালিয়াতি, পুলিশের জালে সিদ্ধহস্ত ঠগ
তাকে দেখে বা তার সঙ্গে কথা বলে কেউ সন্দেহ করবেনা। এমনই তার কথাবার্তার ধরন। কিন্তু ১৪ নম্বর বিয়েটা করে পুলিশের জালে ধরা পড়ল সে।
পেশায় সে নাকি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল। এই পরিচয়ই সকলের কাছে দিত সে। এমন এক ভাল চাকরিরত ভদ্রসভ্য পুরুষের বিয়ের প্রস্তাব অনেক মহিলাই ফিরিয়ে দিতে পারেননি।
এক্ষেত্রে মহিলাদের খুব ভেবেচিন্তে বেছে নিত রমেশ চন্দ্র সাঁই ওরফে বিধু প্রকাশ সাঁই ওরফে রমণীরঞ্জন সাঁই। নিজে ওড়িশার বাসিন্দা। তাই কখনও কোনও ওড়িশার মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিত না।
ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট দেখে এমন মহিলা খুঁজে যোগাযোগ করত যিনি মধ্যবয়সী, একা থাকেন, ভাল পয়সাকড়ি আছে এবং একজন জীবন সঙ্গী চাইছেন।
মধ্যবয়সী একা মহিলারা তার সঙ্গে দেখা করার পর তার পেশার কথা শুনে এবং তার পরিশীলিত আচার ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হতেন। বিয়ের প্রস্তাব ফেরাতেন না। সাঁইও তাঁকে বিয়ে করত।
তারপর ওই মহিলার টাকাকড়ি, সম্পত্তি হাতিয়ে ফিরে আসত ওড়িশায়। বেশ কিছুদিন চুপচাপ থাকত। তারপর শুরু হত তার পরবর্তী মহিলাকে জালে জড়ানোর কাজ।
পুলিশ জানাচ্ছে এভাবেই কমপক্ষে ১৪ জন মহিলাকে বিয়ে করেছে সাঁই। শেষ যে মহিলাকে বিয়ে করে সাঁই তিনি দিল্লির এক শিক্ষিকা। তাঁকেও ঠকিয়ে পালাতে মহিলা সোজা পুলিশের কাছে হাজির হন। পুলিশ তদন্ত শুরু করে অবশেষে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে ওই ৫৪ বছরের নানা নামধারী সাঁইকে গ্রেফতার করে।
আর গ্রেফতার করা পর পুলিশ জানতে পারে তাকে ২০০৬ সালেই কেরালা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল ১৩টি ব্যাঙ্ক থেকে ১ কোটি টাকার ওপর জালিয়াতির অভিযোগে। এছাড়া তাকে হায়দরাবাদ পুলিশও একবার গ্রেফতার করে।
ছাত্রছাত্রীদের মেডিকেল কলেজে সুযোগ করে দেবে বলে ২ কোটি টাকার ওপর হাতিয়েছিল এই সাঁই। পুলিশর খপ্পর থেকে ছাড়া পেয়ে এবার সে ধরেছিল বিয়ের ঠগবাজি।
একের পর এক মহিলাকে বিয়ে করেছে, তাঁদের সঙ্গে কিছুদিন কাটিয়েছে। তারপর তাঁদের সব টাকাকড়ি, সম্পত্তি হাতিয়ে পালিয়েছে। পুলিশের ধারনা সাঁইয়ের জালে আরও মহিলা পড়েছেন। কিন্তু তাঁরা লোকলজ্জার ভয়ে সামনে আসতে পারছেন না। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা