হেলিকপ্টার থেকে গরুর গাড়ি, সবই ছুটছে এক দুর্গম গ্রামের দিকে
কেউ ছুটছেন হেলিকপ্টারে করে। কেউ ছুটছেন পায়ে হেঁটে বা গরুর গাড়িতে চেপে। লক্ষ্য একটাই। একটি গ্রামে গিয়ে পৌঁছনো। লক্ষ লক্ষ মানুষের গন্তব্য একটাই।
একটা সময় ছিল যখন এ গ্রামে মানুষকে পৌঁছতে হলে অনেক কষ্ট করতে হত। পায়ে হেঁটে বা গরুর গাড়িতে চেপে মাইলের পর মাইল অতিক্রম করে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে পৌঁছতে হত গ্রামটিতে।
এখন অবশ্য সময় বদলেছে। দূর দূর থেকে মানুষ আসছেন এখানে। আসছেন ৩টে দিনের জন্য। তাও ২ বছরে একবার। কিন্তু এই ৩টে দিন লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় জমে একটি ছোট গ্রামে।
বাধ্য হয়ে সরকার সকলের যাতে থাকা, খাওয়া বা শৌচাগারের সমস্যা না হয় সে ব্যবস্থা করেছে। তৈরি হয়েছে পাকা রাস্তা। এমনকি হেলিপ্যাডও তৈরি করতে হয়েছে সরকারকে।
তেলেঙ্গানার মুলুগু জেলার মেদারাম গ্রাম। একটি অভয়ারণ্য লাগোয়া জঙ্গলে ঘেরা ছোট গ্রামে পালিত হয় সাম্মাক্কা সারাক্কা জাতারা উৎসব।
অষ্টম শতাব্দী থেকে চলে আসা এই উৎসব আদপে আদিবাসী দেবীদের আরাধনা। গত শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্তও এখানে কেবল কোয়া আদিবাসীরা পুজো করতেন। উৎসব পালন করতেন। কিন্তু এখন কোয়া আদিবাসী নন এমনও বহু মানুষ এই উৎসবে অংশ নেন।
ফলে উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা এখন লক্ষ লক্ষ। এখানে আদিবাসী দেবীদের গুড় দিয়ে পুজো দেওয়া হয়। এই আদিবাসীদের দেবী পুজোকে কেন্দ্র করে এখানে উৎসবের আবহ তৈরি হয়।
দুর্গম জঙ্গলের কারণে এখানে পৌঁছনোই দায় ছিল সকলের। কিন্তু এখন তেলেঙ্গানা সরকার ভাল রাস্তা বানিয়ে দিয়েছে। সেই রাস্তা ধরে হাজার হাজার মানুষ কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ গরুর গাড়িতে চেপে, কেউ বা নিজের গাড়িতে চেপে হাজির হন এখানে।
তৈরি হয়েছে একটি হেলিপ্যাডও। কারণ মানুষের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে ২০১০ সাল থেকে এখানে পৌঁছনোর জন্য হেলিকপ্টার পরিষেবাও চালু হয়েছে। তবে খরচটা স্বাভাবিকভাবে বেশি।
শুধু তেলেঙ্গানা বলেই নয়, মহারাষ্ট্র, ছত্তিসগড় সহ গোদাবরীর ২ কূলের ধারে বসবাসকারী আদিবাসীরা অনেকেই এখানে হাজির হন এই সময়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা
আসলে আমরা এখনও আমাদের সেই হারিয়ে যাওয়া গ্রামের শৈশবে ঘটে যাওয়া স্মৃতিগুলোকে খুব মিস করি।