কাণ্ড বেয়ে স্কুটারে চেপে গাছে চড়েন কৃষক, পেড়ে আনেন ফল
বয়স হয়ে গেলে উঁচু গাছে চড়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয়না। আর তা যদি সুপুরি, নারকেল বা তালগাছ হয় তাহলে তো মহা মুশকিল। তারই মুশকিল আসান করছে একটি স্কুটার।
গাছের কাণ্ড জড়িয়ে থাকে স্কুটারটি। হাতে থাকে স্কুটারের মত ২টি হ্যান্ডল। রয়েছে গতি পরিবর্তনের উপায়। এবার একদিকের ছোট সিটে বসে স্কুটারে স্টার্ট দিলেই হল। ইচ্ছামত গতিতে সিটে বসা মানুষটিকে নিয়ে ওই স্কুটার সোজা কাণ্ড বেয়ে উঠে যাবে গাছে। ৬০ থেকে ৭০ ফুট উঁচু গাছে উঠতে অনায়াসে সক্ষম এই গাছে চড়া স্কুটার।
এমনই এক আবিষ্কার ভারতের কেন বিশ্বের কৃষিজীবী মহলে আলোড়ন ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এই স্কুটার তৈরি হয়েছে কয়েক বছরের পরিশ্রমে।
এক সুপুরি চাষির মাথায় প্রথম আসে এই আইডিয়া। এমন কিছু বানাতে হবে যা তাঁকে নিয়ে গাছে চড়বে। কারণ সুপুরি গাছে ওঠানামা করা তাঁর বয়সে আর সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে তিনি বসে পড়েন সেই যন্ত্র তৈরি করতে।
অবশ্যই একা এক কৃষকের পক্ষে এমন এক স্কুটার বানানো সম্ভব ছিলনা। তাই তিনি তাঁর ভাবনা ও প্রাথমিক কাজ নিয়ে কথা বলেন ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে। সকলে মিলে এরপর শুরু হয় গাছেচড়া স্কুটার বানানোর লড়াই।
অবশেষে আসে সাফল্য। এই স্কুটারকে বাস্তব রূপ দিতে কর্ণাটকের মেঙ্গালুরুর কৃষক বছর ৫০-এর গণপতি ভাট খরচ করেছেন প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা।
তাঁর একটি ১৮ একরের ফার্ম রয়েছে। সেখানে অধিকাংশই সুপুরি গাছ। প্রসঙ্গত ভারতই হল বিশ্বের সর্বোচ্চ সুপুরি উৎপাদনকারী দেশ। যে সুপুরির সিংহভাগই উৎপাদিত হয় কর্ণাটক ও কেরালায়।
এখন গণপতি ভাট যখন সিটবেল্ট কোমরে লাগিয়ে স্কুটার চালিয়ে গাছে ওঠানামা করেন তখন গ্রামবাসীরা অবাক চোখে তাকিয়ে দেখেন। গণপতি ভাট বলেন তাঁর এই আবিষ্কার সফল হওয়ায় তাঁর জীবন সার্থক। এরমধ্যেই তিনি তাঁর তৈরি স্কুটার ৩০০টি বিক্রি করে ফেলেছেন। প্রতিটির দাম করেছেন ৬২ হাজার টাকা।
এখন আকাশ ছোঁয়া সুপুরি গাছে ওঠানামা তাঁর কাছে অতি সহজ কাজে পরিণত হয়েছে। গাছের মাথায় পৌঁছে নিশ্চিন্তে তিনি পরখ করে দেখেন কোন সুপুরি পাড়বেন, কোনটা তখনও হওয়া বাকি। তাঁর এই গাছে চড়া স্কুটারের ভিডিও ইউটিউবেও আলোড়ন ফেলে দিয়েছে।