৯০ ডিগ্রিতে বেঁকে ঘাড়, সীমানাপারের কিশোরীকে নতুন জীবন দিলেন চিকিৎসকেরা
চিকিৎসকের মূল ধর্মই হল সেবা। সেই সেবাধর্মের সঙ্গে অসাধ্য সাধনকে জুড়ে দিলেন একদল চিকিৎসক। ৯০ ডিগ্রিতে বেঁকে যাওয়া ঘাড়ের এক কিশোরীকে নতুন জীবন দিলেন তাঁরা।
সেবা কোনও কাঁটাতারের বেড়া মানে না। তারই প্রমাণ দিলেন ভারতীয় ডাক্তাররা। তার দেশে সম্ভব হয়নি। কিন্তু কিশোরীকে নতুন জীবন দিতে ঝুঁকিটা নিয়ে নেন ভারতীয় চিকিৎসকেরা। সীমানা পারের কিশোরীকে নতুন জীবন দিতে নিজেদের উজাড় করে দিলেন তাঁরা।
কিশোরীর মুখে তাঁরা হাসি ফিরিয়ে দিয়েছেন। আর এই পুরো কর্মকাণ্ডের যে বিপুল ব্যয়ভার তাও সম্পূর্ণ মকুব করেছেন তাঁরা। পাকিস্তানের ওই কিশোরী এখন একদম স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছে।
যদিও এধরনের অস্ত্রোপচার ওই কিশোরীর জীবনের পক্ষে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারত। অস্ত্রোপচার করা হয়েছে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে গত সপ্তাহে। এ ধরনের অস্ত্রোপচার করলে বাঁচার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ।
পাকিস্তানের নাগরিক ওই মেয়েটির নাম আফশিন। ২০১৮ সাল থেকে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালের ডাক্তাররা পরীক্ষা করছেন তাকে। খেলার সময় দুর্ঘটনা ঘটায় আফশিনের ঘাড়টি বিপজ্জনকভাবে বেঁকে গিয়েছিল। তখন তার বয়স ছিল মোটে ৮ মাস।
অ্যাপোলো হাসপাতালের ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এধরনের অস্ত্রোপচারে জীবন সংশয় পর্যন্ত হতে পারে। একথা ওই কিশোরীর দাদা মহম্মদ ইয়াকুবকে জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল তিনি বোনের জটিল এই অস্ত্রোপচারে রাজি কিনা তা ভেবে দেখতে। ভাবনা চিন্তা করে আফশিনের পরিবার সম্মত হওয়ায় অস্ত্রোপচার করা হয়। মিলেছে সাফল্যও।
বিশিষ্ট শল্যচিকিৎসক রাজাগোপালনের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই। আফশিনের ঘাড় সোজা করার জন্যে যে অস্ত্রোপচারটি করে সাফল্য মিলেছে তাকে নজিরবিহীন বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
আফশিন একইসঙ্গে সেরিব্রাল পালসিতেও আক্রান্ত। গত সপ্তাহে দিল্লিতে আফশিনকে অপারেশন টেবিলে শুইয়ে বিরল অস্ত্রোপচারের সাফল্য মেলায় খুশি চিকিৎসকরাও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা