৩ ঘণ্টায় উঠল ২ লক্ষ টাকা, শিক্ষককে বাইক উপহার দিলেন ১৮ বছরের তরুণ
তিনি পেশায় একজন শিক্ষক। তবে ভাগ্যের ফেরে জীবন এখন অনেক কঠিন। তাঁর সেই কাহিনি শোনার পর এক ১৮ বছরের তরুণ নিলেন অসামান্য পদক্ষেপ।
বাইরে আগুন ঢালছে সূর্য। পিচ গলছে। এই গরমে কোল্ড ড্রিংসটা ফুড ডেলিভারি সংস্থায় অর্ডার দিয়ে দিয়েছিলেন ১৮ বছরের ছেলেটি। ঠিক যে সময় ডেলিভারি আসার কথা, সেই সময় কলিং বেল বেজে ওঠে।
১৮ বছরের তরুণ দরজা খুলে দেখেন সামনে দাঁড়িয়ে আছেন বছর ৩১-এর এক ডেলিভারি বয়। বাইরে পারদ ৪২ ডিগ্রি ছুঁয়েছে। এই প্রবল গরমে একটা সাইকেলে চেপে তাঁকে কিন্তু একদম সঠিক সময়ে কোল্ড ড্রিংস পৌঁছে দিয়েছেন ওই ডেলিভারি বয়।
ওই তরুণ ডেলিভারি বয়ের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। জানতে পারেন, ওই ডেলিভারি বয় সবে ৪ মাস হল একাজ শুরু করেছেন। তিনি তার আগে ১২ বছর একটি স্কুলে ইংরাজির শিক্ষক হিসাবে কাজ করেছেন।
ডেলিভারি দিতে এসে আদিত্য শর্মা নামে ওই তরুণের সঙ্গে ইংরাজিতেই কথা বলেছিলেন ৩১-এর যুবক। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁর শিক্ষকতার চাকরিটা গেছে।
এদিকে ব্যাঙ্কে বাইক কেনার জন্য ঋণ, জীবন চালানোর খরচ, এসব সামাল দিতে অগত্যা বেছে নিতে হয় ডেলিভারি বয়ের চাকরিটা। এখন এই প্রবল লড়াই করে সাইকেলে খাবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে মাসের শেষে রোজগার ১০ হাজার টাকা।
দুর্গা শঙ্কর মীনা নামে ওই যুবকের এই কাহিনি শোনার পর আদিত্য সোশ্যাল সাইটে ওই কাহিনি বিস্তারিতভাবে লেখেন। তারপর লেখেন ওই যুবক যদি সাইকেলের বদলে একটা বাইক পান তাহলে তাঁর কাজটা অনেক সহজ হয়।
এজন্য আদিত্য ক্রাউড ফান্ডিং চান। জানান ৭৫ হাজার টাকা তুলতে পারলে দুর্গা শঙ্করকে একটা বাইক উপহার দেওয়া যেতে পারে।
আদিত্য জানিয়েছেন মাত্র ৩ ঘণ্টার মধ্যেই দেখা যায় তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছেন অনেকে। ৩ ঘণ্টায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা উঠে যায়।
আদিত্য দুর্গা শঙ্কর মীনাকে ডেকে নিয়ে যান একটি বাইকের শোরুমে। সেখানে ৯০ হাজার টাকার একটি বাইক কিনে তাঁর হাতে চাবি তুলে দেন।
চাবি হাতে পাওয়ার পর আর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি দুর্গা শঙ্কর। বাকি যে টাকা ক্রাউড ফান্ডিং থেকে উঠেছিল, তা আদিত্য তুলে দেন দুর্গা শঙ্করের হাতে। সেই টাকা দিয়ে লোনটা মিটিয়ে দিতে বলেন আদিত্য। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এই ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের ভিলওয়ারায়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা