সারারাত ঘন জঙ্গল পার করে প্রসূতিকে কাঁধে চাপিয়ে হাসপাতালে পৌঁছলেন গ্রামবাসীরা
ঘন জঙ্গল। পদে পদে বন্য হিংস্র প্রাণির ভয়। তার মধ্যে দিয়ে প্রাণ হাতে করে প্রসূতিকে সারা রাত কাঁধে ঝুলিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন গ্রামবাসীরা।
দেশে যখন আধুনিকতার বন্যা বইছে, প্রাচুর্যেরও অভাব নেই, সেখানে এখনও এমন এলাকা রয়েছে যেখানে কোনও মহিলার প্রসববেদনা শুরু হলে বা কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে আনার জন্য একটা অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায়না। এমন ঘটনাই সামনে এসেছে।
জঙ্গলের মধ্যে একটি গ্রাম। সে গ্রামে এমন কেউ নেই যাঁর মোটর চালিত কোনও যান আছে। শহর থেকে গাড়ি চেয়েও পাওয়া যায়নি।
এদিকে এক প্রসূতির প্রসববেদনা ক্রমশ বাড়ছিল। এই অবস্থায় উপায়ান্তর না দেখে গ্রামবাসীরা বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত নেন ঝুঁকি থাকলেও তাঁরা ওই মহিলাকে কাঁধে ঝুলিয়েও হাসপাতালে পৌঁছে দেবেন।
কাপড় আর গাছের ডাল দিয়ে একটি ডুলি মত বানানো হয়। তাতে শোয়ানো হয় ওই মহিলাকে। তারপর গ্রামবাসীরা মোটা গাছের ডালে সেটি ঝুলিয়ে কাঁধে করে পাড়ি দেয় শহরের পথে। রাত ১টায় জঙ্গলের পথে পা বাড়ান তাঁরা।
কর্ণাটকের চামারাজানগরের মহাদেশ্বর পাহাড় অঞ্চলের ঘন জঙ্গলের বুক চিরে তাঁরা রওনা দেন সুলভাদির পথে। মাঝ রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকার জঙ্গলে রয়েছে বাঘ, হাতি, ভাল্লুক থেকে নানা হিংস্র জানোয়ারের ভয়।
যে কোনও সময় তাঁদের ওপর বন্য প্রাণির হানা হতে পারে। তবু জীবন বাজি রেখে ৮ কিলোমিটার জঙ্গল পার করে ভোর ৬টায় তাঁরা ওই ডুলি নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন। সেখানে সান্তালা নামে ওই রমণী এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন মা ও শিশু ভাল আছে। কিন্তু প্রশ্ন হল ওই গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের বাস। তবু প্রশাসন সেখান থেকে অসুস্থদের আনার ব্যবস্থা আজও করে উঠতে পারল না কেন? উত্তর জানেননা গ্রামবাসীরাও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা