অভিভাবকের দায়িত্বে পুলিশ, পুণ্যার্থীরা দিলেন ফল, মিষ্টি, শাড়ি, গয়না, বিয়েটা হয়েই গেল
পুলিশের আচরণ এবার হৃদয় ছুঁয়ে গেল অনেকের। নিজে থেকেই এগিয়ে এলেন শ্রাবণ মাসে ভগবান শিবের মাথায় জল ঢালতে আসা ভক্তরা। সব মিলিয়ে বিয়েটা হয়ে গেল।
থানায় সেদিন হাজির হন এক তরুণ ও এক তরুণী। কোনও অভিযোগ জানাতে তাঁরা আসেননি। আসেন পুলিশের সাহায্য চাইতে। তাঁরা জানান তাঁদের বাড়ির লোক নেই। ওই তরুণকে তাঁর পরিবার বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছে ২ বছর হয়ে গেছে। আর তরুণীকে অনেক আগেই তাঁর বাবা মা ছেড়ে চলে গেছেন।
যে আত্মীয়দের কাছে তিনি থাকেন তাঁরাও তাঁর বিয়ে দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তাই কার্যত নিঃস্ব ওই তরুণ তরুণী চান পুলিশ তাঁদের অভিভাবক হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিক।
পুলিশ প্রথমে অবাক হলেও তারপর রাজি হয়ে যায়। থানা জুড়ে বেশ একটা বিয়ের আবহ তৈরি হয়ে যায়। শুরু হয় তোরজোড়।
কাছেই রয়েছে বাবা অধেশ্বরনাথ ধাম। সেখানে এই শ্রাবণ মাসে ভক্তের ঢল নামে। পুলিশ স্থির করে সেখানেই ওই ২ তরুণ প্রাণকে সাতপাকের বন্ধনে আবদ্ধ করবে। পুলিশ মন্দির কমিটির সঙ্গে কথা বলে। মন্দির কমিটি এক কথায় রাজি হয়ে যায়।
মন্দিরে এই বিয়ের তোরজোড়ের কথা জানতে পেরে যে পুণ্যার্থীরা বাবার মাথায় জল ঢালতে এসেছিলেন তাঁরাও খুশবু আর বিজয়ের এই বিয়েতে শামিল হয়ে যান। মহিলারা নিয়ে আসেন শাড়ি, মঙ্গলসূত্র, কানের দুল, ছোটখাটো গয়না। পুরুষরা আয়োজন করেন মিষ্টি, ফল, বিয়ের প্রয়োজনীয় উপকরণের।
তারপর পুলিশ প্রায় অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে মন্দিরে আগত ভক্তদের সাক্ষী রেখে ওই তরুণ তরুণীর বিয়ে দেয়। বিয়েতে কনের যে বিদায় পর্বের অনুষ্ঠান থাকে তা পালন করেন থানার মহিলা পুলিশরা।
পুলিশের তরফ থেকে নতুন সংসার শুরুর জন্য বেশ কিছু উপহারও পান ওই নবদম্পতি। উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ের শাহপুর বেতি গ্রামে হওয়া এই বিয়ের পর সেখানকার পুলিশ পুরো এলাকার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা