বাবা মাকে বাঁকে ঝুলিয়ে তীর্থে নিয়ে গেলেন এ যুগের শ্রবণ কুমার
বাবা মাকে ২ কাঁধে ঝুলিয়ে তীর্থ করতে নিয়ে গেলেন ছেলে। এই দৃশ্য শ্রবণ কুমারের কাহিনি থেকে নেওয়া নয়, বর্তমান ভারতেই এই ছবি উঠে এসেছে।
এ কাহিনি রামায়ণের। শ্রবণ কুমার নামে এক ছেলে ছিল। তার বাবা মা অন্ধ ছিলেন। তাই বাড়ির সব কাজ তো বটেই, শ্রবণ কুমারকে তার বাবা মায়েরও সর্বক্ষণ যত্নে মনোনিবেশ করতে হত।
যখন তার বাবা মায়ের বয়স হল তখন তারা তীর্থ ভ্রমণের ইচ্ছা পোষণ করলেন। শ্রবণ কুমার বাবা মায়ের সাধ পূরণ করতে তাদের ২টি ঝুড়িতে বসিয়ে বাঁকের মত ২ কাঁধে ঝুলিয়ে তীর্থে বার হলেন। তারা অযোধ্যায় এসে পৌঁছলেন।
তখন অযোধ্যার রাজা ছিলেন দশরথ। তিনি শিকারে বেরিয়েছিলেন। এদিকে তৃষ্ণার্ত অন্ধ পিতা মাতার তৃষ্ণা মেটাতে তাদের নামিয়ে শ্রবণ কুমার গিয়েছিলেন সরযূ নদীতে জল আনতে। সেখানে ঘড়া ডোবাতেই জল ভরার একটা আওয়াজ হতে থাকল।
রাজা দশরথ ভাবলেন কোনও জন্তু হয়তো নদীর ধারে এসেছে। তাই সেই আওয়াজ লক্ষ্য করে তির ছুঁড়লেন তিনি। যা শ্রবণ কুমারের বুকে গিয়ে বেঁধে। শ্রবণ কুমারকে ওই অবস্থায় দেখে পাপবোধে দশরথ দিশেহারা হয়ে যান।
শ্রবণ কুমার তার বাবা মাকে জল পান করানোর জন্য দশরথকে অনুরোধ করে। কিন্তু শ্রবণ কুমারের বাবা মা বুঝতে পারেন যিনি জল পান করাতে এসেছেন তিনি শ্রবণ কুমার নয়। পরে দশরথ ২ জনকে তিরবিদ্ধ ছেলের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর শ্রবণ কুমারের মৃত্যু হয়।
বৃদ্ধ অন্ধ পিতা মাতা পুত্রশোকে কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান। তার আগে দশরথকে অভিশাপ দিয়ে যান তাঁরও এভাবেই পুত্রশোকে মৃত্যু হবে।
রামায়ণের এ কাহিনি অনেকের জানা। সেখানে শ্রবণ কুমার ঠিক যেভাবে তার পিতা মাতাকে বাঁকে নিয়ে তীর্থ ভ্রমণে বার হয়েছিলেন ঠিক সেভাবেই এখন চলা কানওয়ার যাত্রায় বৃদ্ধ পিতা মাতাকে কাঁধে নিয়ে এক যুবককে যেতে দেখলেন সকলে।
হরিদ্বার, গঙ্গোত্রী, গোমুখ এবং সুলতানগঞ্জে পৌঁছন এই কানোয়ার যাত্রীরা। সেখান থেকে ভগবান শিবের জন্য গঙ্গার জল ভরেন ঘড়ায়। সেই যাত্রায় শামিল এই যুবক বাঁকের ২ দিকে বাবা মাকে বসিয়ে যাত্রা হেঁটে চলেন। সেই ছবি হুহু করে ছড়িয়ে পড়ে। সকলেই এই যুগের শ্রবণ কুমারকে দেখে অভিভূত। সকলেই তারিফ করেছেন এমন সন্তানের।