ছবির চেয়েও সুন্দর বসতির বাসিন্দাদের প্রতিদিন তাড়া করে বেড়ায় দুঃস্বপ্ন
এ বসতিতে প্রতিটি সকাল হয় অপরূপ প্রকৃতির কোলে। গেলে মনে হতে পারে স্বর্গে আছেন। কিন্তু সেখানে যাঁরা থাকেন তাঁদের দিন কাটে দুঃস্বপ্নের তাড়ায়।
দুঃস্বপ্ন তাঁদের পিছু তাড়া করে বেড়ায়। বাড়িতে কারও শরীর খারাপ হলে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। অথচ অপরূপ সুন্দর এ গ্রাম। হিমালয়ের বুকে পীরপাঞ্জাল পর্বতসারির মাঝে একটি পাহাড়ের উপরে স্বর্গের মত সুন্দর এই গ্রাম।
জম্মু কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পরু কালনাগ গ্রাম এতটাই সুন্দর প্রকৃতির বুকে যে কেউ সেখানে গেলে ফেরত আসতে ইচ্ছা করবে না। পাহাড়ি এ গ্রামে ১ হাজার ১০০ বাসিন্দার বসবাস।
নিস্তরঙ্গ জীবন খুবই সাদামাটা। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের মাঝেই তাঁদের প্রতিটি দিন কাটে। কিন্তু এত সুন্দর এক জায়গায় এমন সুন্দর একটি গ্রামের প্রতিটি পরিবার প্রতিদিন এক অজানা আতঙ্কে ভোগেন। দুঃস্বপ্ন তাড়া করে বেড়ায় তাঁদের। তাঁদের খালি মনে হয় কেউ অসুস্থ হলেন না তো।
এটা ভাবার মধ্যে ভুল কিছু নেই। এই গ্রামের কারও বুকে একটু ব্যথা হলে, কিডনির সমস্যা হলে বা আচমকা কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তা সারানোর জন্য নেই কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতাল।
এ গ্রাম থেকে পাকা সড়কে আসতে ১২ কিলোমিটার পাহাড়ি পাথরের টুকরো বিছানো পথে হাঁটতে হয়। তাকে পথ না বলাই ভাল।
পাথরের টুকরোয় ভরা স্বাভাবিক ভাবে পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা ওই পথই কিন্তু একমাত্র ভরসা। কিন্তু রোগী নিয়ে ওই পথ অতিক্রম করতে গ্রামবাসীরা হিমসিম খান। দীর্ঘ সময় লেগে যায় ওই পথ অতিক্রম করে সড়কে পৌঁছতে। যা রোগীর জন্য অনেক সময়ই প্রাণঘাতী হয়ে যায়।
এক মহিলার বুকে ব্যথা হওয়ার পর সড়ক পর্যন্ত আনতে আনতেই তিনি মারা যান। ২টি কিশোর পা হড়কে কিছুটা নিচে পড়ে যাওয়ার পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের নিয়ে পাকা সড়কে পৌঁছে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয় বটে, তবে তার আগেই যে রক্তক্ষরণ হয় তাতে তাদের বাঁচানো যায়নি। এমন একে পর এক উদাহরণ রয়েছে এখানে।
অথচ গ্রামবাসীদের ক্ষোভ সব দেখেও চুপ করে আছে প্রশাসন। গ্রামে একটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত এখনও তৈরি হয়নি। হয়নি গ্রাম থেকে শহরে পৌঁছনোর জন্য ভাল রাস্তার ব্যবস্থাও। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা