জলে গেল অপহরণের টানটান গল্প, ঋণশোধের বোঝাও ঘাড় থেকে নামল না
অপহরণের পুরো চিত্রনাট্য বেশ গুছিয়েই সাজিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু কাহিনিতে এত ফাঁক ছিল যে ধরা পড়তে সময় লাগল না। কাঁচা কাজে ঋণশোধের বোঝাও ঘাড় থেকে নামল না।
সোমবার সন্ধেয় স্ত্রীকে বলেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাত পর্যন্তও বাড়ি ফেরেননি। ফলে বাড়িতে চিন্তায় পড়ে যান স্ত্রী। এরমধ্যেই ওই ব্যক্তির এক বন্ধু ফোন করেন। জানান শেয়ার বাজারের সঙ্গে যুক্ত শামসি রাজাকে অপহরণ করা হয়েছে। শামসির স্ত্রী যেন দ্রুত ৪০ লক্ষ টাকা জোগাড় করে ফেলেন। কারণ ৪০ লক্ষ টাকা না পেলে অপহরণকারীরা শামসিকে ছাড়বে না।
শামসির স্ত্রী ফারহিন ফাতিমা প্রথমে অপহরণের কথা শুনে ভেঙে পড়েন। কিন্তু তারপর তাঁর একটা সন্দেহ হয়। মুক্তিপণের অঙ্কটা নিয়ে তাঁর সন্দেহ হয়।
তিনি সোজা হাজির হন পুলিশের কাছে। সবটা খুলে বলেন। পুলিশ তদন্তে নামে। বাড়ির আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়।
সেখানে দেখা যায় শামসি তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে চায়ের আড্ডায় রয়েছেন। কিছু পরে তিনি পাড়ার একজনের গাড়িতে করে বেরিয়ে যান। গাড়ির নম্বর পেতে পুলিশের সময় লাগেনি।
এরপর শুরু হয় গাড়ির নম্বর ধরে সেই গাড়ি কোন কোন পথে গিয়েছে তার খোঁজ করা। আর সেই পথের হদিশ পেতেই গাড়ির পথ ধরে পুলিশ পৌঁছে যায় সেখানে যেখানে শামসিকে তথাকথিত অপহরণ করা হয়েছিল। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ।
শামসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিশ জানতে পারে এসবই ছিল শামসির সাজানো। দুবাইয়ে থাকা এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি। অন্য পাওনাদাররা এতটাই চাপ দিচ্ছিলেন যে ওই টাকা দিয়ে তাঁদের কিছু টাকা শোধ করার পরিকল্পনা করেন শামসি।
কিন্তু দুবাইয়ের আত্মীয়কে যাতে ঠেকিয়ে রাখা যায় তাই ওই টাকা মুক্তিপণ দিতে চলে গেছে বলে একটা গল্প সাজানোর চেষ্টা করেন শামসি। যা কার্যত জলে গেছে। লখনউয়ের সাদাতগঞ্জের দরগা রোডে শামসির বাড়ি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা