মাত্র ৯ সেকেন্ডে ধুলোয় মিশে গেল কুতুবমিনারের চেয়ে উঁচু জোড়া প্রাসাদ
একটির উচ্চতা ১০৩ মিটার। গায়ে লাগা অন্য আকাশচুম্বীর উচ্চতা ৯৭ মিটার। এই জোড়া প্রাসাদ বা টুইন টাওয়ার ধুলোর সঙ্গে মিশে যেতে সময় নিল মাত্র ৯ সেকেন্ড।
কুতুবমিনারের চেয়ে উঁচু এই টুইন টাওয়ার দেশের গর্ব হতে পারত। পর্যটন আকর্ষণ হতে পারত। চ্যালেঞ্জ করতে পারত বিভিন্ন দেশের টুইন টাওয়ারদের। এমনকি এই টুইন টাওয়ারের বাসিন্দা হওয়াটাও একটা গর্বের বিষয় হতে পারত। কিন্তু তার কিছুই হল না।
মাত্র ৯ সেকেন্ডের মধ্যে ধুলোয় মিশে গেল এই আকাশ ছোঁয়া ২টি প্রাসাদ। যারা একে অপরের সঙ্গে প্রায় জুড়ে ছিল। বহু কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টুইন টাওয়ার ভারতে এক নয়া ইতিহাস লিখল। যা কেবল দুর্নীতির জন্য ভেঙে পড়ল মেঝেতে।
নয়ডার এই টুইন টাওয়ার তৈরি হয়েছিল একদম অন্য ছাপ রেখে। কিন্তু তা বেআইনিভাবে তৈরি বলে এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা রুজু হয়। সেই মামলায় ২০১৪ সালে এই টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় আদালত।
এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রোমোটাররা যান সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট গত বছরই নির্দেশ দেয় ৩ মাসের মধ্যে টাওয়ার ২টিকে ভেঙে ফেলতে হবে। কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে সে ২টি ভেঙে ফেলা সম্ভব হচ্ছিল না।
অবশেষে ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক দিয়ে ভেঙে ফেলা হল এই জোড়া প্রাসাদ। যার আগে এখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আশপাশের এলাকাও ফাঁকা করে দেওয়া হয়।
প্রতিটি বাড়ি প্লাস্টিকের শিট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পুরো চত্বর ফাঁকা করে দেওয়া হয়। যা করতে অনেকটা সময় লাগে। তারপর রবিবার নির্ধারিত সময় দুপুর আড়াইটেয় ঘড়ি ধরে হয় বিস্ফোরণ।
ধাপে ধাপে বিস্ফোরণে ওই কুতুবমিনারের চেয়েও উঁচু জোড়া প্রাসাদ মাটিতে মিশে যেতে সময় নেয় মাত্র ৯ সেকেন্ড। তারপর অবশ্য চারধার জুড়ে যে ধুলোর কুণ্ডলী পাকিয়ে ওঠে তা দীর্ঘ সময় আকাশ বাতাসকে ঝাপসা করে রাখে।
বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বহু দূর পর্যন্ত মাটি কেঁপে ওঠে এদিন। তবে এটাও একটা উদাহরণ হয়ে রইল। এত বিপুল খরচ করে তৈরি প্রাসাদও বেআইনি হলে প্রশাসন যে তা ভেঙে দিতে পারে, আদালত যে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে তা পরিস্কার হয়ে গেল।
যাঁদের কাছে এই বার্তা যাওয়ার তা তাঁদের কাছে পোঁছেও গেল। ফলে আগামী দিনে তাঁরাও সতর্ক হবেন বলেই মনে করছেন অনেকে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা