৬ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল আধার কার্ড
পুলিশ পারেনি। চেনাশোনা থেকে আত্মীয়রা পারেননি। পরিবারের সকলে তোলপাড় করে খুঁজে তার দেখা পাননি। অবশেষে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। ৬ বছর পর ঘটল চমৎকার।
সালটা ২০১৬-র নভেম্বর মাস। ১৫ বছরের এক মূক ও বধির কিশোরকে বাড়ির লোকজন দীর্ঘ সময় খুঁজেও পাননি। আশপাশ তন্নতন্ন করে খুঁজেও না পেয়ে তাঁরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তার খোঁজ মেলেনি। পুলিশও এক সময় হাল ছেড়ে দেয়।
এদিকে সেই সময় নাগপুর রেলস্টেশনে এক কিশোরকে পাওয়া যায়। মূক ও বধির ওই কিশোর নিজের নাম বা ঠিকানা কিছুই বলতে পারেনি। অনেক খুঁজেও তার পরিবারের খোঁজ না মেলায় অবশেষে তার জায়গা হয় একটি অনাথাশ্রমে। সেখানেই সে বড় হতে থাকে।
তার নাম কি সে বলতে না পারায় তার নামকরণও হয়। তার নাম হয় প্রেম রমেশ ইনগালে। গত জুলাই মাসে আশ্রমের তরফে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় তার আধার কার্ড তৈরি করতে।
আধার কার্ড পেতে গেলে বায়োমেট্রিক অর্থাৎ আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেই বারবার চেষ্টা করেও নথিভুক্ত করানো যাচ্ছিল না। মেশিন দেখাচ্ছিল যে এই ছাপ আগে থেকেই রয়েছে। এই ছাপের সাপেক্ষে আধার কার্ডও রয়েছে।
আশ্রম কর্তৃপক্ষ প্রেমকে নিয়ে ফিরে আসেন আশ্রমে। তারপর তাঁরা মুম্বইয়ে ইউআইডিএআই-এর অফিসে খোঁজখবর নেন। সেখান থেকেই এখন ২১ বছর বয়স্ক ওই তরুণের আধার নম্বর পাওয়া যায়।
দেখা যায় ১৫ বছর বয়সে হারিয়ে যাওয়ার আগেই তার পরিবার তার আধার কার্ড করিয়েছিলেন। আর সেই আধার কার্ডে তার নাম লেখা রয়েছে শোচন কুমার। আধার কার্ডেই তার বাড়ির ঠিকানাও পাওয়া যায়।
বিহারের খাগারিয়া জেলায় তার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করা হয়। তার মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা শোচন কুমার যে তাঁদের বাড়ির ছেলে তার প্রমাণ নিয়ে হাজির হন নাগপুরে।
অবশেষে সব প্রমাণ খতিয়ে দেখে শোচন কুমারকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ৬ বছর পর হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দের বাঁধ ভাঙে মায়ের। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা