জীবনে কখনও মাইনের টাকা তোলেননি, মৃত্যুর পর ব্যাঙ্ক ব্যাল্যান্স ৭০ লক্ষ
চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে কখনও তিনি মাইনের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তোলেননি। তাঁর বাবাও তুলতেন না। অথচ এর তার থেকে ভিক্ষা করে চলত জীবন।
মানুষ কতরকম ভাবে চিন্তা করেন তার আর এক উদাহরণ পাওয়া গেল। এক ব্যক্তির মৃত্যু হল সারা জীবন চাকরি করে। অথচ সেই চাকরির এক টাকাও তিনি খরচ করলেন না। কোনও এক অজ্ঞাত কারণে তাঁর বাবাও মাইনের টাকায় হাত দিতেন না। সেটা ব্যাঙ্কেই বছরের পর বছর জমত।
পিতার রাস্তাতেই হাঁটেন ধীরজও। তিনিও তাঁর মাইনের টাকায় হাত দিতেন না। ব্যাঙ্কে মাসের পর মাস মাইনে পড়ে, কিন্তু কেউ তোলেন না, এটা নজরে পড়ার পর ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা তাঁর বাড়িতেও আসেন।
ধীরজ তাঁদের কারণ দর্শান। সেইসঙ্গে তাঁদের সামনে প্রতিবছর তাঁর আইটি অর্থাৎ আয়কর প্রদান ফাইলও খুলে দেন। সব কিছু দেখে ব্যাঙ্কের আধিকারিকরাও আশ্বস্ত হয়েই ফেরেন।
গত রবিবার হাসপাতালে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকাকালীন ধীরজের মৃত্যু হয়। তাঁর ৮০ বছরের বৃদ্ধা মা রয়েছেন। ধীরজের ব্যাঙ্কের স্যালারি অ্যাকাউন্টে দেখা গেছে ৭০ লক্ষ টাকা জমেছে।
ধীরজের বাবা একটি হাসপাতালে সাফাইকর্মীর কাজ করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর সেই কাজটা ছেলে ধীরজ পান। বাবার পথে হেঁটে ধীরজ কখনও অ্যাকাউন্ট থেকে ১ টাকাও তোলেননি। সংসার চালাতেন বাবার পেনশনের টাকায়।
মা ও তাঁর সংসারে যদিও বা কখনও বেশি টাকার প্রয়োজন পড়ত তখন ধীরজ কার্যত ভিক্ষা করে সেই টাকা জোগাড় করতেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক থেকে তুলতেন না।
এমনকি বন্ধুদের ধীরজ জানিয়েছিলেন যে তিনি কখনও বিয়ে করবেন না। কারণ তাঁর আশঙ্কা ছিল যিনি তাঁর স্ত্রী হয়ে আসবেন তিনি তাঁর ব্যাঙ্কের জমানো টাকা তুলে নিয়ে কখনও পালিয়ে যেতে পারেন। প্রয়াগরাজের বাসিন্দা ধীরজের মৃত্যুর পর এখন তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা ৭০ লক্ষ টাকার দাবিদার কেবল তাঁর মা। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা