National

এ জঙ্গলের সব গাছকে রাখি পরিয়ে ভাই বানান আদিবাসীরা, কারণ অবশ্য অন্য

এ জঙ্গলের সব গাছকে রাখি পরান স্থানীয় আদিবাসীরা। এও এক উৎসব। জঙ্গলের উৎসব। যাতে শামিল নারী, পুরুষ, শিশু সকলেই।

জঙ্গলে গাছের সংখ্যা গুনে ওঠাই একটা প্রায় অসম্ভব কাজ। সেই জঙ্গলের মহীরুহদের রাখি পরান তাঁরা। এই রাখিবন্ধনের দিনটা উৎসবের চেহারা নেয়।

বড় বড় গাছের গুঁড়ির কাছে হাজির হন আদিবাসী গ্রামের নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ থেকে ছোটরাও। তারপর শুরু হয় গাছকে রাখি পরানো।


প্রতিটি গাছকে রাখি পরিয়ে গাছদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে বেঁধে ফেলেন তাঁরা। আর এই রাখি বন্ধনকে কেন্দ্র করে গ্রামে গ্রামে হয় উৎসব।

গাছের সঙ্গেই তাঁদের নিত্য বাস। জঙ্গলের সঙ্গে, সেখানকার প্রতিটি গাছের সঙ্গে তাঁদের এক আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর সেখানেই আসে রক্ষার প্রসঙ্গ।


জঙ্গলে বেআইনিভাবে গাছ কাটা চলে। যাতে তা না হতে পারে তাই গাছদের রাখি পরিয়ে গ্রামবাসীরা অঙ্গিকার করেন যে তাঁরা তাঁদের রক্ষা করবেন। কোনও ক্ষতি হতে দেবেন না।

ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার বিশাল অরণ্যে এই রাখিবন্ধন উৎসব এক অন্য বার্তা ছড়িয়ে দিতে পেরেছে। প্রশাসনকেও অনেকটা নিশ্চিন্ত করেছে।

কারণ বেআইনিভাবে গাছ কাটতে এলে রুখে দাঁড়াচ্ছেন গ্রামবাসীরাই। আবার প্রতি গ্রীষ্মে গ্রামবাসীরাই জঙ্গলের শুকনো ডালপালা ও মরা গাছ সাফ করে জঙ্গলকে পরিস্কার রাখেন।

হাতিমাদা এলাকার জঙ্গলে এই উদ্যোগ শুরু হয় ১৯৯২ সালে। তখন এখানকার জঙ্গলে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য চলছে। এদের হাত থেকে গাছদের রক্ষা করতে ১০ জন গ্রামবাসী মিলে জঙ্গল পাহারা শুরু করেন।

২০০৪ সালে এই জঙ্গল পাহারার দায়িত্ব এখানকার সব গ্রামের আদিবাসীরা নিজেদের কাঁধে তুলে নেন। ওই বছর থেকেই শুরু হয় গাছে রাখি পরিয়ে তাদের নিশ্চিন্ত করার উৎসব। তারপর থেকে প্রতিবছর এই অন্য রাখিবন্ধন অনুষ্ঠিত হয় ধুমধাম করে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article
Back to top button