পাতা ফাঁদে পা না দিয়েও শিকারির সামনে দিয়ে টোপ তুলে নিয়ে গেল বুদ্ধিমান বাঘ
এমন স্মার্ট বাঘ দেখে শিকারিও এখন হতভম্ব হয়ে গেছেন। তাঁরই নাকের ডগা দিয়ে তাঁরই পাতা ফাঁদে না দিয়ে টোপ তুলে নিয়ে চলে গেল বাঘ।
তাকে ধরতে বিখ্যাত শিকারি নবাব শাফাত আলি খান ঘুমপাড়ানি গুলির বন্দুক হাতে অপেক্ষা করছিলেন ৪ দিন ধরে। তাঁর সঙ্গে ঘাপটি মেরে অপেক্ষায় ছিলেন বন দফতরের অন্য আধিকারিকরাও।
বিহারের পশ্চিম চম্পারণ জেলার বাল্মীকি অভয়ারণ্যে মানুষখেকো বাঘটিকে পাকড়াও করতে একটি খাঁচা পাতা হয়। যার মধ্যে প্রথমে টোপ হিসাবে একটি মোষ ও একটি ছাগল রাখা হয়। কিন্তু প্রথম দিনে তার দেখা মেলেনি।
দ্বিতীয় দিনে মোষটি সরিয়ে খাঁচার মধ্যে কেবল ছাগল রাখা হয়। কিন্তু তারপরেও তার দেখা নেই। অগত্যা ছাগলটিকে খাঁচার বাইরে বার করে রাখা বেঁধে রাখা হয়। স্থির হয় বাঘ ছাগল ধরতে এলেই তাকে ঘুমপাড়ানি গুলি করা হবে।
শিকারি তাঁর অব্যর্থ লক্ষ্য নিয়ে তৈরি থাকেন। চতুর্থ দিন ভোরের দিকে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে অবশেষে হাজির হয় বাঘ। সে এমনভাবে আচমকা ছাগলটির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নিমেষের মধ্যে সেটিকে নিয়ে পালায় যে শিকারি থেকে বন কর্মীরা কেউ বুঝেই উঠতে পারেননি কি হয়ে গেল।
যখন বুঝতে পারলেন তখন গুলি চালালেন বটে। তবে তা বাঘের গায়ে লাগেনি। সে টোপ হিসাবে রাখা ছাগলটি নিয়ে শিকারির নাকের ডগা দিয়ে পালিয়ে যায়।
ইতিমধ্যেই ৩ জন মানুষকে মেরেছে করেছে বাঘটি। জমিতে কৃষিকাজ করার সময়ও মানুষকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে সে। মানুষখেকো বাঘের তাণ্ডবে রাতের ঘুম উড়ে গেছে গ্রামবাসীদের।
এ বাঘ এতটাই চালাক যে মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য সে একটা মাত্র জায়গায় স্থির থাকেনা। নিজের অবস্থান বদল করতে থাকে। এই জঙ্গল থেকে ওই জঙ্গলে চলে যেতে থাকে।
তাকে ধরতে গিয়েও ব্যর্থ হন শিকারি থেকে বন কর্মীরা। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিজের অবস্থান বদল করত এই চালাক বাঘটি। বন কর্মীরা এখন জানতে পেরেছেন মসান নদী পার করে নেপাল সীমান্তের কাছে রাঘিয়া জঙ্গলে অবস্থান করছে মানুষখেকো বাঘটি।
এখন তাকে পাকড়াও করাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ সে যতক্ষণ স্বাধীনভাবে ঘুরবে ততক্ষণ মানুষের জীবনহানির সম্ভাবনা থেকে যাবে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা