National

গিরিখাতে পড়ে যাওয়া তরুণকে প্রাণে বাঁচিয়ে দিল হাতঘড়ি

চারিদিকে পাহাড়ের সারি। তার মাঝে গভীর গিরিখাত। ঘন জঙ্গলে ঘেরা। কোথাও কোনও জনবসতির চিহ্ন নেই। সেখানে পা ভেঙে পড়ে থাকা এক তরুণকে বাঁচাল হাতঘড়ি।

নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে এক তরুণকে বাঁচিয়ে ফিরিয়ে আনল একটি হাতঘড়ি। বন্ধুদের সঙ্গে ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন ওই তরুণ। ট্রেকিং ভালই চলছিল। চারিদিকে পাহাড়ের সারি। আর পাহাড়গুলির মাঝে যে উপত্যকা তা গহন অরণ্যে ভরা।

কোথাও জন মানুষের দেখা নেই। পাহাড়ের গা বেয়ে অনেক নিচে নেমে গেছে গিরিখাত। যেখানে পড়লে আর রক্ষে নেই। পাহাড়ে চড়াটা ঠিকঠাকই হয়েছিল। কিন্তু বিপত্তি হল নামার সময়।


একে সেদিন প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল। তার মধ্যে পাহাড়ে ট্রেকিং করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। তরুণ বয়সে সে চ্যালেঞ্জ নিয়ে পাহাড়ে ঘুরে নিচে নামার পালা চলছিল। কিন্তু প্রবল বৃষ্টিতে পাহাড়ের অতি সরু পথে কাদামাটিতে পা হড়কে যায় স্মিতের।

পাহাড়ে পা হড়কানো মানে বিপদ। সেটাই হয়। পা হড়কে স্মিত গিরিখাতে পড়ে যান। গিয়ে পড়েন প্রায় ১৫০ ফুট নিচে উপত্যকায়।


ঘন জঙ্গলে ভরা উপত্যকায় পড়ার পর তাঁর গোড়ালি ২টি ভেঙে যায়। যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করেন স্মিত মেহতা। চিৎকার করতে থাকেন।

কিন্তু ওই ঘন জঙ্গলে ঘেরা উপত্যকা থেকে পাহাড়ের ওপরে তাঁর বন্ধুদের কাছেও আওয়াজ পৌঁছয়নি। স্মিত পড়ে যাওয়ার পর তাঁকে খাদের ধার থেকে দেখার চেষ্টাও করেন বন্ধুরা। কিন্তু দেখতে পাননি।

যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা স্মিতকে তখন উদ্ধার না করতে পারলে তাঁকে বাঁচানো যেত না। বহু দূর দূর পর্যন্ত কোনও মানুষ নেই। ফলে তাঁর চিৎকারও কেউ শুনতে পাচ্ছেন না।

পকেটে থাকা মোবাইল ফোনটিও কোথায় পড়ে গেছে জানা নেই। এই অবস্থায় স্মিতের মনে পড়ে তাঁর হাতে থাকা স্মার্টওয়াচটির কথা। ওই হাতঘড়ি থেকে ফোনও করা যায়।

স্মিত মেহতা প্রথমে হাতঘড়ি থেকে বাবা মাকে ফোন করে সব জানান। তারপর ট্রেকিংয়ে সঙ্গে থাকা বন্ধুদের ফোন করে নিজের অবস্থান জানান। বন্ধুরা দ্রুত ব্যবস্থা নেন।

স্মিতকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি ঘটে বেশ কিছুদিন আগে। তাঁকে উদ্ধারের পর প্রায় ৩ মাস হাসপাতালে ভাঙা গোড়ালি নিয়ে কাটাতে হয় স্মিতকে।

ঘটনাটি ঘটে মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে। স্মিতকে পুনের একটি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করা হয়। তাঁর প্রাণ রক্ষার জন্য হাতঘড়িকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন সদ্য তরুণ স্মিত মেহতা সহ তাঁর পরিবার।

Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button