কোটি টাকার রোজগার ছেড়ে গরুদের জন্য দিনরাত এক করছেন চিকিৎসক
কোটিতে রোজগার করছিলেন। চিকিৎসক হিসাবে সুনাম ছিল। বিলাসবহুল জীবন ছিল। পরিবার, রোজগার সব ছেড়ে এখন গরুদের নিয়ে দিনরাত এক করে লড়ছেন মহিলা চিকিৎসক।
যে টাকা রোজগার করতেন তা ভালভাবে জীবন কাটানোর জন্য যথেষ্ট। মুম্বই শহরে তাঁর চিকিৎসক হিসাবে সুনাম ছিল। ফলে রোজগারও ছিল মোটা অঙ্কের। স্বামীও বিজ্ঞানী। তাঁরও মোটা রোজগার।
মুম্বইতে সাজানো সংসার, বিলাসবহুল জীবন ছিল। সেসব ছেড়ে তিনি এখন গরুদের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এসে পড়ে আছেন ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার চাকুলিয়াতে।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে চিকিৎসক শালিনী মিশ্র সব ছেড়ে চলে আসেন এখানে। কলকাতার একটি সংগঠন পিঞ্জরাপোল সোসাইটির একটি জমি এখানে ছিল। ১০ একর সেই জমিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধবিমান নামত।
সেই জমি ধ্যান ফাউন্ডেশন নিয়ে সেখানে একটি গোশালা বা গোয়াল তৈরি করে। সেই গোয়ালের দায়িত্ব নিয়ে সেখানে হাজির হন শালিনী। তবে এজন্য তিনি কোনও টাকা পান না। এ কেবল মনের শান্তি।
এই গোয়ালে সাড়ে ১৪ হাজারের ওপর গরু রয়েছে। স্থানীয় প্রায় ৩০০ জন সেখানে গরুদের দেখভালে কর্মরত। প্রতিদিন শালিনী মিশ্র নিজে প্রতিটি গরুকে পরীক্ষা করে দেখেন। তারা সব সুস্থ কিনা নিশ্চিত হন।
শালিনীর এটা প্রাত্যহিক রুটিন। বছরের একটি দিনও তিনি একাজ থেকে ছুটি নেন না। ৩ বছরের ওপর তিনি এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবার, স্বামী থেকে দূরে থেকে। তবে তাঁর একাজে তিনি পাশে পেয়েছেন পরিবারকে।
স্বামী বেদ প্রকাশ একজন বিজ্ঞানী। তাঁর মাসিক রোজগার ৮ লক্ষ টাকা। তার থেকে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা এই গোয়ালের খরচ বাবদ তিনি প্রতি মাসে পাঠান।
মেয়ে অস্ট্রেলিয়ার গবেষণারত। ২ লক্ষ টাকার স্কলারশিপ পান। তা থেকে তিনিও টাকা পাঠান। ছেলেও চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করছেন মুম্বইতে।
তবে শালিনী নিজের জীবনটাই এই গরুদের দেখভালে উৎসর্গ করে চাকুলিয়ায় পড়ে আছেন। গরুদের ভাল রাখার ব্রত পালন করে নিজের জীবনের সবটুকু খুশি উপভোগ করেন শালিনী মিশ্র। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা