দরিদ্র পিতার দেখানো পথেই হেঁটে মানুষের পেট ভরছেন কোটিপতি ছেলে
ছোটবেলায় দারিদ্র চোখের সামনে দেখেছেন। দেখেছেন পিতার দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই। তবু তাঁর একটি লাইন মনে রেখে আজও কঙ্গো থেকে ছুটে আসেন ২ ছেলে।
বাবা চাকরি করতেন পরিবহণ দফতরে। ২০০ বর্গফুটের ঘরে বাবা, মা, ২ ভাই ও ১ বোন থাকতেন কষ্ট করে। তবে ৩ ভাইবোন ছোট থেকে দেখেছেন যতই দারিদ্র থাক, বাবা প্রতিদিন সকালে কাজে বার হওয়ার সময় মাকে বলতেন বেশ কিছু রুটি করে দিতে। সেগুলি তিনি পকেটে পুরে নিতেন। তারপর বেরিয়ে পড়তেন।
বাসচালক হিসাবে তিনি বাস নিয়ে যে রুটে যেতেন, সেখানে মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে দরিদ্র ক্ষুধার্ত মানুষের হাতে তুলে দিতেন সেই রুটিগুলি। আবদুল নরসিংঘানি বলতেন তাঁর চৌকাঠ থেকে কেউ যেন খালি হাতে ফিরে না যান। এসব দেখেই বড় হয়েছেন আবদুলের ছেলেমেয়েরা।
১৯৯৮ সালে ২ ছেলে অমন ও আসলাম তাঁদের দ্বাদশ শ্রেণির পড়া শেষ করে কাজের জন্য পাড়ি দেন আফ্রিকার উগান্ডায়। ২০০১ সালে তাঁরা উগান্ডার পাশের দেশ কঙ্গোতে ওষুধের ব্যবসা করার সুযোগ পান।
ভারত ও চিন থেকে ওষুধ আনিয়ে বিক্রি করতে শুরু করেন সেখানে। এভাবে তাঁদের ব্যবসা দ্রুত বড় হতে থাকে। এখন তাঁদের ব্যবসার বাৎসরিক আয় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এখন শুধু ওষুধ নয়, বৈদ্যুতিন জিনিসের ব্যবসাও শুরু করেছেন ২ ভাই।
কঙ্গোতেই তাঁদের ব্যবসা হলেও মাঝে মাঝেই তাঁরা মুম্বইয়ে তাঁদের আদি বাসস্থান যবতমলে ফিরে আসেন। সেখানে এখন তাঁদের ২০০ বর্গফুটের বস্তির ঘরের বদলে ১০ হাজার বর্গফুটের বাড়ি।
তবে এখনও তাঁরা ভোলেননি বাবার সেই প্রাত্যহিক শত আর্থিক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও দরিদ্রদের রুটি দেওয়া। অমন ও আসলাম এখনও প্রত্যেকদিন দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন।
একটা জায়গা থেকে নয়, যবতমলের একাধিক জায়গা থেকে প্রতিদিন বিনামূল্যে দরিদ্রদের মধ্যে ভাত, সুস্বাদু সবজির তরকারি, চিকেন বিরিয়ানি সহ এক এক দিন এক এক রকম খাবার বিতরণ করার ব্যবস্থা করেছেন ২ ভাই। ২০১৫ সালে তাঁদের বাবা গত হয়েছেন। তবে ২ ভাই তাঁর দেখানো পথে ৩৬৫ দিন দরিদ্র সেবা করে চলেছেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা